আবির দত্ত, কলকাতা: যাদবপুরকাণ্ডে (JU Student Death) চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, নদিয়ার হতভাগ্য ছাত্রর ওপর চলেছিল চরম অত্যাচার। সিনিয়রদের নামের পাশে কুরুচিকর ও অশালীন মন্তব্য লিখে সেগুলি চিৎকার করে পড়তে বলা হয় ওই ছাত্রকে।
যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩ জনকে। ধৃতদের জেরা করে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। কীভাবে ওই উপর অত্যাচার হয়েছিল, তা উঠে এসেছে তদন্তে। যা কার্যত শিউরে ওঠার মতো। পুলিশ সূত্রে খবর, লুকিয়ে সহপাঠিনীদের ছবি তুলে আনতে বলা হয়। ওই ছাত্র সমকামী কি না জানতে চাওয়া হয় বারবার। পুলিশ সূত্রে খবর, আলাপ-পরিচয়ের নামে নদিয়া থেকে আসা ওই ছাত্রের ওপর চলে চরম অত্যাচার।
যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুতে অভিযুক্তদের অপরাধমনস্কতা আরও স্পষ্ট। পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়। সেই কারণেই পুলিশকে হস্টেলের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্র পড়ে যাওয়ার পরেই জিবি মিটিং ডেকেছিল প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী। বলা হয়, সবার বক্তব্য এক না হলে, পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়তে হবে। ছাত্র যেখানে পড়েছিল, সেই জায়গা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয় জিবি মিটিংয়ে। সেখানেই শিখিয়ে দেওয়া হয় পুলিশকে কী বলতে হবে। জিবি মিটিংয়ে শেখানো বুলিই পরে পুলিশের কাছে আউড়ে গিয়েছেন আবাসিকরা। এর আগে হস্টেলের নিরাপত্তা রক্ষী জানিয়েছিলেন, ঘটনার পর কয়েকজন ছাত্রকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছিলেন। পুলিশ মনে করছে, জিবি মিটিংয়ের নির্দেশ মেনে সেইসময় তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছিল।
এদিকে দায়িত্ব পাওয়ার পরেই, রবিবার ছুটি থাকা সত্ত্বেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির মানলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক। ধোঁয়াশা বজায় রইল CCTV বসানো নিয়ে। নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানিয়েছেন, CCTV নাকি হিউম্যান মনিটরিং, কীভাবে নজরদারি চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে যাদবপুরের নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানিয়েছেন, অ্যান্টি র্যাগিং সেলকে আরও সক্রিয় হতে হবে। ক্যাম্পাস ও হস্টেলে সার্বিক নিরাপত্তা ফেরানো জরুরি।