রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: চেয়ারম্যানের চেয়ারে কে বসবেন? তা নিয়েই বিভিন্ন পুরসভায় দেখা যাচ্ছে অশান্তি। কিন্তু জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ি পুরসভার (Maynaguri Municipality) প্রথম চেয়ারম্যানের শপথগ্রহণের মঞ্চে জায়গা না পাওয়ার অভিযোগে বাধল গোলমাল! জেলা তৃণমূলের (TMC) সভানেত্রীর সঙ্গেই তরজায় জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল নেতা ও ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণী ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ।


চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী-সহ কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণের মঞ্চে ডাক না পাওয়ায় দলবল নিয়ে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যান ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণি ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ অজয় মল্লিক। পরে তিনি বলেন, ‘আজ শপথ ছিল। সবাইকে ডাকা হয়েছে। একজন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হয়েও আমাকে ডাকেনি, তাই আমরা বেরিয়ে এসেছি।’ 


আরও পড়ুন ‘টাকার জন্য সারাদিন ঘুরে বেড়াচ্ছেন বহু পঞ্চায়েত সদস্য’,ভাইরাল ভিডিওতে তৃণমূল মন্তব্য ঘিরে জোর তরজা


তৃণমূল কর্মীদের একাংশ সরাসরি চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারীকে নিশানা করতে থাকেন। আশিস দাস নামে এক তৃণমূল কর্মীর কটাক্ষ, ‘চেয়ারম্যান কে করল একে! এর দ্বারা কতটা উন্নয়ন হবে সন্দেহ। এর আগে বিধায়ক ছিলেন, কিছুই করেননি। একে নিয়ে আমরা খুশি নই।’


অস্বস্তিতে পড়ে এ বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেছেন, ‘মতবিরোধ থাকতে পারে, কর্মাধ্যক্ষ হই বা সভানেত্রী, টিএমসি সিম্বলটাই পরিচয়।’


পুরসভার মর্যাদা পাওয়ার পরে এবারই প্রথম ভোট হয়েছে ময়নাগুড়িতে। মোট ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতেই জিতেছে তৃণমূল। একটি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন নির্দল প্রার্থী। প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীকে ময়নাগুড়ির প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই শক্ত ঘাঁটিতেও তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে।


জলপাইগুড়ি লোকসভা বিজেপির দখলে। জেলার সাতটির মধ্যে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রও তাদের দখলে। কিন্তু পুরসভা ভোটে একেবারে উল্টো ফল। জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভাতেই বিপুল ভোটে জিতেছে তৃণমূল। এই তিনটি পুরসভার মোট ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে শুধু মালবাজারে মাত্র একটি ওয়ার্ডে জিতেছে বিজেপি। জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি পুরসভায় তারা খাতাই খুলতে পারেনি। এই প্রেক্ষাপটে জলপাইগুড়ি পুরসভার ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেদার ছাপ্পা মারার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।