রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহে, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে গৃহবধূর ওপর অমানবিক নির্যাতন। চুল কেটে, জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম! ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মহিলার ওপর নৃশংসতার ছবি ভাইরাল। খুব সাবধানে কেটে কুটে ইউজ কোরো। নির্য়াতিতার মুখ, আত্মীয়, বাড়ি ঘর সব ব্লার। মহিলাকে চড়, লাথি, ঘুষি। বেধড়ক মারধরের পর, চুল কেটে, রক্তাক্ত শরীরে মাখিয়ে দেওয়া হয় চুন। এরপর জুতোর মালা পরিয়ে, সারা গ্রাম ঘোরানো হয় বধূকে।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক সন্দেহে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে গৃহবধূর ওপর নৃশংস অত্যাচার। নৃশংসতার মুহূর্তের ভিডিও, ছড়িয়ে দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মহিলার আগেও দুটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তৃতীয় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। শনিবার রাতে গ্রামে ফিরতেই তাঁকে ঘিরে ধরে গ্রামবাসীরা। শুরু হয় বেধড়ক মার। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির অভিযোগ, অত্যাচারের সময়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সদস্য।
রাজগঞ্জের বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন সভাপতি দেবাশিস দে-র কথায় গতকাল মহিলাকে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে এই অত্যাচার। রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় জানিয়েছেন, আইন আইনের মতো চলবে। দল না দেখে অ্যারেস্ট করুক। নৃশংস অত্যাচার। এই ঘটনায় তিন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজগঞ্জ থানার তরফে জানানো হয়েছে, ভিডিও খতিয়ে দেখে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
কিছুদিন আগে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে স্বামীকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এলাকাবাসীর তত্পরতায় সিঁড়ির নীচ থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয় মৃতের স্ত্রী ও মৃতের পিসতুতো ভাই। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন বলে অনুমান ছিল তদন্তকারীদের।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কই কি কেড়েছিল প্রাণ? পথের কাঁটা সরাতেই স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের হাতে খুন হতে হল গৃহকর্তাকে? মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে স্বামীকে খুন ও দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগের ঘটনায় উঠে আসছে এমনই প্রশ্ন! মৃত বছর ৪০-এর রাম মুসোহার পেশায় রঙের মিস্ত্রি ছিলেন।
কীভাবে সামনে এল গোটা ঘটনা? হরিশ্চন্দ্রপুরের ডেলি মার্কেট এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, মৃতের স্ত্রী পঞ্চমী মুসোহার এবং মৃতের পিসতুতো দাদা মনোজ রামকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাড়া করার জন্য গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিন্তু কী কারণে গাড়ি ভাড়া করতে চাইছেন, জিজ্ঞাসা করা হলে দু’জনের মন্তব্যেই অসঙ্গতি মেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তখনই সিঁড়ির নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় রাম মুসোহারের দেহ! এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয়, মৃতের স্ত্রী ও মৃতের পিসতুতো দাদাকে।
আরও পড়ুন: Kolkata: কলকাতায় নয়া আতঙ্ক, 'বান্টি-বাবলির' কায়দায় ক্যাব চালককে গাড়ি সহ অপহরণ