জলপাইগুড়ি : আরজি কাণ্ডের প্রতিবাদে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। একাধিক দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে টানা ধর্নায় রয়েছেন তাঁরা। এই আবহে এবার রাজ্যের অন্য প্রান্তে জুনিয়র চিকিৎসকদের খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। ঘটনার জেরে ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা।
ক্যানসার আক্রান্ত রোগিণীকে মৃত ঘোষণার পর ময়নাতদন্তের কথা বলা হয়। রোগিণীর ময়নাতদন্তের কথা বলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু ময়নাতদন্তের কথা বলায় বেঁকে বসে মৃতের পরিবার। অভিযোগ, ময়নাতদন্ত ছাড়াই ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেওয়ার দাবি জানায় পরিবার। রাজি না হওয়ায় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে হাসপাতালে অবস্থানে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শেষপর্যন্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এসে আশ্বাস দিলে আড়াই ঘণ্টা পর অবস্থান ওঠে। আজ জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, সরকারের সার্কুলার আছে, যদি Brought Death রোগী হয় সেক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত করতে হবে। ওঁরা বলতেই শুরু করে দিয়েছিলেন, এখানে ময়নাতদন্ত করাবেন না। আমরা ওঁদের বোঝাতে শুরু করি যে এতে আমাদের কিছু করার নেই। ওঁরা বলতে থাকেন, পোস্টমর্টেম করতে দেব না। বোঝানো হয়েছিল। তাঁরা মেনেও গিয়েছিলেন। কিন্তু, ডিউটিতে যে পুলিশ ছিলেন তিনি হঠাৎ করে এসে বলেন, আমাদের কিছু দেয়নি। ডাক্তারবাবু আটকে রেখেছেন। সেখান থেকেই ঝামেলা বাড়তে শুরু করে। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। যেখানে রোগীর পরিবারের পক্ষে থেকে ভাবা হয়, আমরা বোধ হয় নিজেদের স্বার্থে দেহ আটকে রাখছি। তাঁরাও হুমকি দিতে থাকেন। এদিক ওদিক থেকে উল্টোপাল্টা কথা বলতে থাকেন। এখানে সবথেকে নিন্দাজনক পুলিশের ভূমিকা।
আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন অব্যাহত-
রাত পেরিয়ে সকাল, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে টানা অবস্থানে জুনিয়র চিকিৎসকরা। আর জি কর-কাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করা, খুনের মোটিভ সামনে আনা, বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার ইস্তফার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় তাঁরা। গিটার বাজিয়ে গান, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগান, এই ভাবেই কেটেছে গোটা রাত। সকালেও স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চলছে স্লোগান-শাউটিং। গতকাল নবান্ন থেকে মেল করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব এসেছিল। মেলের ভাষা ‘অপমানজনক’ বলে দাবি করে, তা প্রস্তাব ফিরিয়েছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা আগেই জানিয়েছেন, দাবি না মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।