রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: 'নদী মানুষের ঘর ভাঙছে, অথচ রাজ্য সরকার নির্বিকার। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেছেন, যেহেতু বিজেপিকে এরা ভোট দিয়েছে সুতরাং ওখানে আমরা কিছু করব না, আমাদের ওখানে ভোট নেই।' গ্রামবাসীর বিপদে মালবাজার ব্লকের টটগাওয়ে এসে এমটাই অভিযোগ করলেন বিজেপি  সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায়। 


জয়ন্ত কুমার রায় আরও বলেন, তিস্তার আগ্রাসনে একটি গ্রাম বিপন্ন, নদী ভাঙনে এখন পর্যন্ত নটা বাড়ি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে, আরো চলে যাবে, সঙ্গে যাচ্ছে কৃষি জমিও। মানুষের বাড়িঘর চলে যাচ্ছে নদীর গর্ভে অথচ রাজ্য সরকার নির্বিকার। মানুষের বসতি বাঁচতে এখন পর্যন্ত কোনও সদর্থক ভূমিকা নেয়নি, প্রশাসনের কর্তা ও জেলাশাসক। মাল ব্লকের তিস্তা নদীর ভাঙনে বিপন্ন টটগাও বস্তিতে এসে এমন ভাষায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ করলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ। উল্লেখ্য, মাল ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম টটগাও বস্তি, তিস্তার পূর্ব পাড়ে এই গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবারের বসবাস। কৃষি ও পশুপালন প্রধান জীবিকা, গত কয়েক বছর ধরে তিস্তার আগ্রাসনে বিঘার পর বিঘা আবাদি জমি চলে যায় তিস্তার গর্ভে। চলতি বছরে নদী মানুষের বসতির কাছে চলে আসে, ইতিমধ্যে কয়েকটি বাড়িঘর নদীর গর্ভে গিয়েছে। অন্যান্যরা বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। বাঁধ তৈরি করার দাবীতে বাসিন্দারা জাতীয় সড়কের পাশে রিলে অনশনেও বসেছিল। পরে ব্লক প্রশাসনের আশ্বাসে অনশন তুলে নেয়। ব্লক প্রশাসনও প্রোটেকশন ওয়ার্ক শুরু করেছিল কিন্তু, নদীর ভয়ংকর আগ্রাসনে তা ফলপ্রসূ হয়নি।এই পরিবেশে শুক্রবার দুই সাংসদ তথা জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ও এই বস্তিতে আসেন।এদিন রাজু বিস্তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাবার চাল এবং বাড়ি তৈরির টিন দেন, পাশাপাশি নয়টি পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেন। 


  আরও পড়ুন, 'শুভেন্দুকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না ?', 'সিবিআই সেটিং' নিয়ে বিস্ফোরক শান্তনু


প্রসঙ্গত, একদিকে নদী ভাঙনের জেরে একের পর এক বাড়ি, স্কুলের একাংশ মিশে গিয়েছে। গঙ্গার পাড় ভাঙনে বিপদজনক হয়ে পড়া জিরাটের চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ।বিচারপতির নির্দেশে আজ খয়রামারি স্কুল পরিদর্শনে যান স্পেশাল অফিসার সুদীপ্ত দাশগুপ্ত।স্কুল গঙ্গার পার পরিদর্শনের পর স্থানীয় প্রশাসন ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। যদিও শুধু হুগলিতেই এই সমস্যা নয়, নাইবা শুধু জলপাইগুড়িতে, গঙ্গা নদীপথের পাশে গড়ে ওঠা রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাই আজ বিপর্যস্ত। আর যা নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাডছে এলাকাবাসীর।