জলপাইগুড়ি: প্রতিমা বিসর্জনের সময় হঠাৎই জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বান ( Harpa Ban incident)। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ আরও অনেকে। আশঙ্কা, আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মালবাজারের ক্যালটেক্স মোড়ে। এই ইস্যুতে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে সরব বিরোধীরা। প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জন বার্লাও। তিনি বলেন, 'এটা মাল নদীর মাঝখানে রাত্রিবেলা করা উচিত হয়নি', বলে অভিযোগ তুলেছেন।  এনিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)।


জন বার্লার বক্তব্যের পাল্টা উদয়ন গুহ বলেন, 'ওদের তো ডেডবডিকে নিয়েই রাজনীতি। ওরা সেই রাজনীতিটাই করছেন। ওই মৃতদেহ নিয়ে সময় বা পরিবেশ নেই। দুর্গতদের পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায়, আমরা সেই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছি। যদি কেউ নিখোঁজ থাকে, তাঁকে খুঁজে বার করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। প্রশাসনের কী গাফিলতি ছিল, সেগুলি পরে খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু সেটা নিয়ে তরজা করার সময় নেই। এই বিষয় নিয়ে যারা, রাজনীতি করছেন, তাঁদের মানবিকতা কতটা আছে, সেই বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।' প্রসঙ্গত,  জলপাইগুড়ির  মালবাজারে মাল নদীতে হড়পা বানে আহতদের ভর্তি করা হয় মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। মৃতদের দেহও নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। হাসপাতালে প্রশাসনিক সাহায্য না মেলার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।


স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে ১০ বছরের এক বালিকা রয়েছে। গতকাল মাঝরাত পর্যন্ত চলে উদ্ধারকাজ। তারপর প্রবল বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ সাময়িক বন্ধ হয়। আজ সকালে নদীর বিভিন্ন অংশে চালানো হবে তল্লাশি। পুলিশ সূত্রে খবর, ৭০টি প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আনা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি প্রতিমা বিসর্জনের পরই বিপর্যয় ঘটে। জলপাইগুড়ির মাল নদীতে গতকাল প্রতিমা বিসর্জনের সময় ৮ জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ছিলেন ঘটনাস্থলে। সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে দড়ি ছাড়া কিছু ছিল না। বিপর্যয় যখন ঘটে, তখন যদি সিভিল ডিফেন্সের আরও কর্মী থাকতেন, তাহলে দ্রুত উদ্ধারকাজ করা যেত বলে তাঁর দাবি।


আরও পড়ুন, বিসর্জন দেওয়া প্রতিমার কাঠামোয় আটকে যাওয়া দেহ উদ্ধার, ফের শোকের ছায়া বাবুঘাটে


 এই বিপর্যয় নিয়ে স্থানীয় সূত্রে একটা সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নদীখাতে আগেই বোল্ডার ফেলা হয়েছিল, যাতে, যেদিকে বিসর্জন হবে, সেদিকে বেশি জল থাকে। হড়পা বানের সময় তা হিতে বিপরীত হয়েছে।  যেখানে বিসর্জন হচ্ছিল, সেদিকেই প্রবল স্ত্রোত এসে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। কয়েকদিন আগেই এই নদীতে হড়পা বান হয়। তারপরও কেন বিসর্জনের সময় বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠছে।