কলকাতা: গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নাম উঠে এসেছে চার্জশিটে। সরাসরি তিনি গরুপাচারে যুক্ত বলে দাবি করেছে সিবিআই (CBI)। অনবুব্রতর হয়ে তাঁর দেহরক্ষী গরুপাচারে (Cattle Smuggling Case) সহযোগিতা করতেন বলে দাবি করা হয়েছে। সূত্র মারফত সেই তথ্য সামনে আসতেই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে নেমে পড়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) অনুব্রতকেই কার্যত মূলচক্রী বলে উল্লেখ করেছেন। তাতে সুকান্ত তথা বিজেপি-র (BJP) রাজ্য  নেতৃত্বকে একহাত নিলেন তৃণমূলের (TMC) জয়প্রকাশ মজুমদার (Jay Prakash Majumdar)। বিজেপি-র নেতারা জনসংযোগ ছেড়ে ব্যোমকেশ বক্সী হয়ে বসেছেন বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। 


অনুব্রতকে কাঠগড়ায় তুললেন সুকান্ত, পাল্টা জয়প্রকাশ


মঙ্গলবার দলের নেতাদের নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপাল লা গণেশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সুকান্ত। সেখান থেকে বেরিয়ে গরুপাচার মামলায় অনুব্রতর গ্রেফতারি এবং সিবিআই চার্জশিট নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন,  "সাগয়ল পুলিশের সাধারণ সাব ইনস্পেক্টর। তার পক্ষে এই চক্র চালানো সম্ভব নয়, যদি না রাজনৈতিক মদক থাকে পিছনে।  তাই সাগয়ল যে চক্র চালাত, বকলমে তা অনুব্রতই চালাতেন। তাঁকে দায় নিতে হবে। অপরাধী যিনি সাজা পাবেন।"


সুকান্তর এই মন্তব্যেই বিজেপি-কে একহাত নেন জয়প্রকাশ। ফোনে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, "এখন তো বিজেপি-র সব নেতাই ব্যোমকেশ বক্সী হয়ে উঠেছেন।  রাজনৈতিক ভাবে মানুষের কাছে না গিয়ে ব্যোমকেশ বক্সীর কাজ করছেন। এই যে বলছেন, সামনে কে রয়েছেন, পিছনে কে রয়েছেন, তা তদন্তকারীদের হাতে ছেড়ে দিন না! আর উনিই বা এত ভিতরের খবর জানছেন কী করে? ইডি-সিবিআই তদন্ত করছে। তদন্তের রিপোর্ট কোর্টে জমা দেবে। কোর্ট ঠিক করবে, কে দোষী, কে নির্দোষ। ভারতের আইন এটাই।"


আরও পড়ুন: Jay Prakash Majumdar: গরুপাচারের নেপথ্যে অনুব্রতই, দাবি সুকান্তর, ব্যোমকেশ বক্সী হয়ে উঠছেন, পাল্টা জয়প্রকাশ


জয়প্রকাশ আরও বলেন, "বিজেপি-র নেতারা মাইক সামনে পেলে, টিভির বুম পেলে ব্যোমকেশ বক্সীর মতো ঘোষণা করে দিচ্ছেন, কে দোষী, কে নির্দোষ। এই নিম্নমুখী রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগে থেকে মিডিয়া ট্রায়াল, দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া, ইডি-সিবিআই অজান্তে নিজেদের রিপোর্ট কোর্টে জমা না দিয়ে ফাঁক করছে। কে দোষী আইন মেনে আদালতই নির্ণয় করুক। তার পর বোঝা যাবে।  বিজেপি নেতাদের বলব, ব্যোমকেশ বক্সী হয়ে নির্বাচন জেতা যায় না। গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠা যায় না মানুষের কাছে।" 


গরুপাচারকাণ্ডে অনুব্রতর সরাসরি যোগ রয়েছে বলে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে যে, অনুব্রতর নাম করেই ব্যবসায়ী এনামুল হকের কাছ থেকে টাকা নিতেন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। গত ৭ বছরে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতায় প্রচুর সম্পত্তি কেনেন সায়গল। সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এমন তথ্য মিলেছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই।


 অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ


এ ছাড়াও চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে যে, সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, অনুব্রতর হয়ে তাঁর দেহরক্ষী সায়গল গরুপাচারে সহযোগিতা করতেন। বীরভূমকে সেফ করিডর হিসেবে ব্যবহারের আশ্বাস দিয়ে ব্যবসায়ী এনামুলের কাছ থেকে টাকা নিতেন সায়গল। এভাবেই ২০১৫-২২, এই ৭ বছরে প্রচুর সম্পত্তি কেনেন অনুব্রতর দেহরক্ষী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তদন্তে অনুব্রত অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।