দক্ষিণ ২৪ পরগনা: জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় (Jaynagar Murder Case) বাজেয়াপ্ত করা দুটি বাইক ঘিরে রহস্য (Byke Mystery)। একটি বাইকের রেজিস্ট্রেশন দলুয়াখাকি গ্রামের সিপিএম কর্মী মুসিবুর রহমান লস্করের নামে। পুলিশের দাবি, মুসিবুর পলাতক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, এই দুটি বাইকে চড়েই আততায়ীরা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্করকে খুন করতে এসেছিল। একটি বাইকের নম্বর প্লেটই ছিল না। দ্বিতীয় বাইকটির অবশ্য নম্বর প্লেট রয়েছে এবং বাইকে নাম লেখা রয়েছে সিপিএম কর্মী মুসিবুর রহমান লস্করের। খোঁজ মিলেছে মুসিবুরের পরিবারের।
সিপিএম কর্মীর পরিবারের দাবি, তৃণমূল নেতার খুনের সময় বাড়িতেই ছিলেন মুসিবুর। পুলিশ আসায় তিনি পালিয়ে যান। এরপরই পেশায় দর্জি সিপিএম কর্মীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সিপিএম কর্মীর পরিবারের দাবি, ওই রাতে বাড়ির সামনেই দাঁড় করানো ছিল বাইক। তাহলে কী করে সেই বাইক ৫ কিলোমিটার দূরে পুলিশ উদ্ধার করল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
ইতিমধ্য়েই জয়নগরকাণ্ডে ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দলুয়াখাকি গ্রামের সিপিএম নেতা-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অন্য দিকে সিপিএম কর্মী, সমর্থকদের বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাতেও পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে।
মৃত সইফুদ্দিন লস্কর ছিলেন তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। পাল্টা এক দুষ্কৃতীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। বাড়ির কাছেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষকৃতীরা। পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রাজনৈতিক কারণ? নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা? কী কারণে খুন খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন, পুলিশ সরলেই ফের 'হামলার আশঙ্কা' জয়নগরের ঘরছাড়াদের !
গোটা ঘটনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া বামেদের।তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের বগটুই গ্রাম। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। ২০২২-এর ২১ মার্চ, বগটুইয়ের সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। 'যেকোনও মৃত্যু দুঃখজনক, কিন্তু অন্য কারও ঘাড়ে দোষ চাপাবার কোনও মানে হয় না', বলেছেন তিনি। অন্তর্দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় দুষ্কৃতীদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিশানা করেছে শাসক দল, অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।