পার্থপ্রতিম ঘোষ, হিন্দোল দে, সমীরণ পাল, জয়নগর : একজন তৃণমূল নেতার ( TMC Leader Murder )  খুনকে কেন্দ্র করে সোমবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল জয়নগর ( Jaynagar Violence ) , তার রেশ এসে পড়ল মঙ্গলবারও! কে ছিলেন এই সইফুদ্দিন লস্কর? তাঁকে খুন হতে হল কেন? এই প্রশ্ন যখন ঘুরেফিরে উঠছে, তখন বামনগাছি অঞ্চলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অনেককিছু। সইফুদ্দিন লস্কর খুন হওয়ার পর, ৫ কিলোমিটার দূরে দলুয়াখাকি গ্রামে বেছে বেছে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও, স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, রাজ্যে বামেরা ক্ষমতায় থাকাকালীন, সইফুদ্দিনও বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সময় তিনি বারুইপুর আদালতে মুহুরির কাজ করতেন। তখন থেকেই তাঁর থানায় থানায় যাতায়াত শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

  তবে রাজ্যে পরিবর্তন আসার সঙ্গে সঙ্গে,  সইফুদ্দিনের রাজনৈতিক জীবনেও পরিবর্তন আসে। তৃণমূলের কাছাকাছি আসতে শুরু করেন তিনি। সরাসরি নামেন রাজনীতির ময়দানে। 

মুহুরি থেকে কীভাবে ক্ষমতাশালী নেতা ?


তবে ছাড়েননি মুহুরির কাজ। সেই কাজের সূত্রেই একেবারে থানার অন্দরমহলে ঢুকে পড়েন তিনি। প্রথম জয়নগর ও বারুইপুর থানার 'ডাকমাস্টারে'র কাজ পান, পরে জয়নগর ভেঙে বকুলতলা থানা তৈরি হলে, সেই থানারও 'ডাকমাস্টার' হয়ে ওঠেন তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। সূত্রের দাবি, টাকার লেনদেন সংক্রান্ত অনেক কাজের সঙ্গেই জড়িত ছিলেন তিনি। সহকারী হিসেবে বেশকয়েকজনকে নিয়োগও করেন। হাতে আসতে শুরু করে প্রচুর টাকা। ফুঁলেফেঁপে উঠতে শুরু করেন সইফুদ্দিন!                 

আরও পড়ুন :


মাঠের মাঝে রুখে দেন প্রতিপক্ষকে, ফুটবল বিশ্বে অখ্যাত হলেও, ৩১ বছরের মহাত্মা গাঁধী নজর কাড়ছেন ভারতের


          


সাট্টার কারবারের নিয়ন্ত্রক?                                

সইফুদ্দিনের দাপট এতটাই ছিল যে তিনি নিজে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য় ছিলেন। আবার তাঁর স্ত্রীকেও পঞ্চায়েতের প্রধান করেছিলেন। যে কোনও পুলিশি ঝামেলা সামলানো তাঁর কাছে ছিল বাঁ হাতের খেল! অভিযোগ, এলাকায় যে সাট্টার কারবার চলত, তারও অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতেন তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। এলাকায় কান পাতলে শোনা যায় , স্ত্রী সেরিফা বিবি লস্কর পঞ্চায়েত প্রধানের চেয়ারে বসলেও, আসলে এলাকা চালাতেন সইফুদ্দিন। যদিও স্বামী, তৃণমূলের আগে অন্য কোনও দল করতেন না বলে দাবি করেছেন স্ত্রী।


কাদের পথের কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন সইফুদ্দিন লস্কর? কেন? নেপথ্য়ে বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদ? না কি রাজনৈতিক রেষারেষি? তৃণমূল নেতার উত্থানের রহস্যের মতো, তার মৃত্যু নিয়েও এখন ধোঁয়াশা।