অমিতাভ রথ, কেন্দুয়া (ঝাড়গ্রাম): পুজোর কয়েক মাস আগে থেকেই ঝাড়গ্রামের কেন্দুয়াতে ভিড় করেছে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা পরিযায়ী পাখির দল। কাশফুল, শরতের মেঘ বা ঢাকের বোল নয়, ঝাড়গ্রামবাসীর কাছে এরাই পুজোর বার্তাবাহক।
মাঠ ঘাট জুড়ে কাশের বন আর আকাশজুড়ে মেঘের ভেলা দেখে যখন বাঙালি বোঝে পুজো আসছে, তখন ঝাড়গ্রামের মানুষের জন্য পুজোর বার্তা বয়ে আনে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা এই শামুক খোল পাখির দল।
জামবনি ব্লকের কেন্দুয়াতে ৩-৪টি তেঁতুল গাছের ওপর দুর্গাপুজোর মাস দুয়েক আগে থেকে এসে বাসা বাঁধে এরা। জানান দেয়, পুজো আসতে আর বেশি দেরি নেই। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, পুজোর আগে পরিযায়ী পাখির দল আসে। বুঝতে পারি মা আসছে।
কিন্তু পুজোর মরশুম মিটতেই সংসার নিয়ে বাড়ি ফেরার পালা। মন খারাপ হয়ে ওঠে ঝাড়গ্রামের মানুষের। তিনি বলেন, কালীপুজোর পর চলে যায়, মন খারাপ হয়ে যায়।
পুরাণ মতে, উমার বিদায় বার্তা কৈলাশে বয়ে নিয়ে যায় নীলকণ্ঠ পাখি। আর ঝাড়গ্রামের মানুষের জন্য আগমনীর বার্তা বাহক যেন এই পরিযায়ী পাখিরা।
এরাজ্যে বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই আসতে শুরু করেছিল পরিযায়ী পাখির দল। গত জুন মাসে প্রাক বর্ষার মধ্যেই রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে আসতে শুরু করে পরিযায়ী পাখির দল।
প্রতি বছর জুন-জুলাইতে এখানে কুলিক নদীর ধারে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখিরা। বন আধিকারিকদের দাবি, দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমে গিয়েছিল।
কিন্তু গত বছর লকডাউনের জেরে দূষণ কমায় বদলে যায় পরিস্থিতি। গত বছর পক্ষীনিবাসে আসে ৯৮ হাজার ৬৩১টি পরিযায়ী পাখি। যা সর্বকালীন রেকর্ড।
প্রতি বছর শীতপ্রধান দেশ থেকে এখানে বেশ কয়েকটি প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে। প্রজননের পর ফের তারা আবার ফিরে যায় শীতের দেশে।
পরিযায়ী পাখিদের দেখতে প্রতি বছর ভিড় জমান বহু পর্যটক।
আরও পড়ুন: কুলিক পক্ষীনিবাসে আসতে শুরু করছে পরিযায়ীর দল, এবছর রেকর্ড সংখ্যার আশায় বন দফতর