অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: ঝাড়গ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় ৩ হাতির মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। বাঁশতলা এলাকায় হাতির গতিবিধির কথা জানানো হয় বলে দাবি করে বন দফতর। আর বন দফতরের দাবির পাল্টা রেল জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে সতর্কবার্তা দেয় বন দফতর, নজরে পড়েনি।
এবার ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। বন দফতরের দাবি নস্যাৎ করল রেল। ১৮ জুলাই ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশনের কাছে হাওড়ামুখী বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় দুই শাবক-সহ ৩টি হাতির। বন দফতর সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাটি ঘটে রাত ১.৪০ নাগাদ। রেলের ঘাড়েই দোষ চাপায় বন দফতর। দাবি করে, রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে বাঁশতলা এলাকায় হাতির পালের গতিবিধির কথা জানানো সত্ত্বেও তারা সতর্ক হয়নি। রেলের তরফে পাল্টা দাবি, লিখিতভাবে বা টেলিফোন করে নয়, বন দফতর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করেছিল, রাতে ওই মেসেজ নজরে পড়েনি। রেলের বক্তব্য নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
গত ১৮ জুলাই ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ৩টি হাতির। বন দফতর সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাটি ঘটে রাত ১.৪০ নাগাদ। কাটা পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক ও ২টি বাচ্চা হাতি। বন দফতর সূত্রে জানা যায় গভীর রাতে বাঁশতলা এলাকায় ২৫-৩০ হাতির একটি দলকে তাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন বনকর্মী ও হুলা পার্টির সদস্যরা। তখনই ৩টি হাতি রেললাইনের ওপর চলে আসে।দ্রুতগতিতে এসে তাদের ধাক্কা মারে হাওড়ামুখী বারবিল-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। ঘটনায় রেলের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছিলেন বনকর্তারা। আগে থেকে জানানো সত্ত্বেও কীভাবে ঘটল এমন মর্মান্তিক ঘটনা? এই প্রশ্ন তুলে রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল বন দফতর।
বন্য়প্রাণ বাঁচাতে ইতিমধ্যেই পাইলট প্রকল্প 'গজরাজ'-এর সূচনা করেছে রেল। যেখানে, ট্রেন-ট্র্য়াকের ২০০ মিটারের মধ্য়ে কোনও হাতি বা বন্য় জন্তু এলে, ড্রাইভারের কাছে পৌঁছে যাবে মেসেজ। ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করাতে পারবেন চালক। তারপরেও রোখা যাচ্ছে না, ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু। এই ঘটনা সামনে আসার পর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়, খড়গপুর ডিভিশনে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেল সূত্রে খবর মেলে, ট্রেনটি ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সন্ধে ৬টা ১৫ নাগাদ। কিন্তু লেট থাকায় ট্রেনটি আসে রাত ১.৪০-এ। আর এবার বন দফতরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেল স্পষ্ট জানিয়েছে, 'লিখিত বা টেলিফোনে নয়, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করেছিল বন দফতর। 'দুর্ঘটনার রাতে বন দফতরের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ নজরে আসেনি।'