প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) বড়ঞাঁয় তৃণমূলের (TMC) জয়ের বিষয়ে আশাবাদী জেলবন্দি জীবনকৃষ্ণ। উন্নয়নে ভর করেই দলের জয় নিয়ে প্রত্যয়ী নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের (CBI) হাতে ধৃত তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে, আলিপুর আদালতের ভিতরেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ালেন এসপি সিনহা ও সিবিআইয়ের আইনজীবী।
জেলে থেকেও দলের জয়ের আশায় জীবন: সাংবাদিকদের প্রশ্নে জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেন, উন্নয়ন যেহেতু হয়েছে, জয় হবে অবশ্যই। জেলে থেকেও দলের জয়ের আশায় জীবন! পুকুরে মোবাইল ফোন ছুড়ে ফেলে, নিয়োগ দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটের তিনি চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করেছে সিবিআই। আর বড়ঞার এই তৃণমূল বিধায়কের গলায় এবার শোনা গেল পঞ্চায়েত ভোটের 'ভবিষ্যদ্বাণী'। মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে পেশের সময়, তৃণমূলের জয় নিশ্চিত বলেই দাবি করলেন তৃণমূলের জেলবন্দি বিধায়ক। এ দিন আদালতে তোলা হয় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত এসএসএসির প্রাক্তন উপদেষ্টা এসপি সিনহাকেও। বিচারককে এসপি সিনহা বলেন, শরীর ভাল নেই। হাঁটতে চলতে অসুবিধা। ৪০০ দিনে মাত্র ৫ টা জেলার আংশিক তদন্ত সম্পূর্ণ করেছে সিবিআই। মানে সব শেষ হতে ৮-১০ বছর লেগে যাবে।
তখন বিচারক বলেন, চার্জশিটে থাকা বেশিরভাগ লোক বয়স্ক। ওদের অন্তত ট্রায়ালের মুখোমুখি হতে দিন। এ দিন, আদালতে সিবিআই ও এস পি সিনহার আইনজীবীর মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। এসপি সিনহার আইনজীবী বলেন, এই দুর্নীতি চলছে ২০টি জেলা জুড়ে। সবেমাত্র ৪টি জেলা সামনে এসেছে। তাহলে বাকি জেলা আসতে আসতে ৮-১০ বছর লেগে যাবে। সিবিআইয়ের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে এসপি সিনহার আইনজীবী বলেন, কেন আপনি মেদিনীপুরে তদন্ত করছেন না? সিবিআই কি কিছু লোকজনকে বাঁচাতে এইসব করছে? ওখানকার লোক কি আপনাদের পছন্দের? তদন্তের ক্ষেত্রে বাছাই করছে সিবিআই। সিবিআই পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত করছে।
তখন সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, চাইলে আপনার থেকে জোরে কথা বলতে পারি। এটা ভুল হচ্ছে স্যার। সিবিআই অত্যন্ত ভাল কাজ করছে। সঠিক কাজ করছে। ইনি যা খুশি বলছেন। বলতে হলে লিখিত দিন। আমরা উত্তর দেব। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে যখন আলিপুর আদালতে এসপি সিনহার আইনজীবী সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্নের মুখে দাড় করাচ্ছেন, তখন ফের একবার প্রভাবশালী তত্ত্ব টেনে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, এরা সকলে অত্যন্ত প্রভাবশালী। এখনও যে তথ্য় সংগ্রহ করা বাকি আছে, জামিন দিলে সেগুলো নষ্ট করা হতে পারে। একটা চেন ধরে তদন্ত এগোচ্ছে। আমরা জাম্প করে যেখানে সেখানে যেতে পারি না।
এ দিকে আলিপুর আদালতে যখন সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃতের আইনজীবী, তখন নিজাম প্যালেসে বিশেষ বৈঠক করলেন সিবিআই কর্তারা।
দায়িত্ব নেওয়ার পরেই কলকাতায় এলেন সিবিআইয়ের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মনোজ শশীধর। বৈঠক করেন সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর অজয় ভাটনাগর ও সিবিআইয়ের বিভিন্ন জোনের জয়েন্ট ডিরেক্টরদের সঙ্গে। সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা ও গরুপাচারকাণ্ডে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।