কলকাতা: লকআপে তিনরাত শৌচালয়ের পাশে ঠাঁই হয়েছিল ফিজিক্সে ফার্স্ট ক্লাস দেবব্রত সহ ৪ জনের (Job Seekers Protest)। নাওয়া-খাওয়াও প্রায় হয়নি। জামিন পেয়ে চোখের জল যেন বাধ মানছে না তাঁদের। কীভাবে কী ঘটে গেল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না তাঁদের পরিবারও।

জামিনের পরও চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ: পরিবারের মুখে ভাত তুলে দিতে, দরকার একটা চাকরি। কিন্তু, সেই চাকরির জন্য় রাস্তায় নেমে, জুটেছে জেলের ভাত।চাকরির দাবিতে, মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়ির কাছে বিক্ষোভ দেখানোয়, জামিন অযোগ্য় ধারা দিয়েছিল পুলিশ। তারপর গরাদের পিছনে কাটানো তিনটে রাত, এখনও বিভীষিকার মতো তাড়া করছে এই শিক্ষিত যুবকদের। জামিনপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থী দেবব্রত সিংহ মহাপাত্রের অভিযোগ, “আমাদের বাথরুমের পাশে একটা শতরঞ্চি পেতে ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল। গন্ধ বেরোচ্ছিল। যে না গিয়েছে সে বুঝবে না কী নরক!’’



সোমবার জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর, তাঁদের দিকে যখন পুষ্পবৃষ্টি করা হচ্ছে, তখনও এই চাকরিপ্রার্থীদের চোখেমুখে শুধুই আতঙ্ক আর ক্লান্তির ছাপ। পদার্থবিদ্য়ায় ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে স্নাতকোত্তর দেবব্রত সিংহ মহাপাত্র। কিছুতেই ভুলতে পারছেন না হাজতবাসের যন্ত্রণা। দেবব্রতর কথায়, “আমি ফিজিক্সে মাস্টার ডিগ্রি করেছি। আমার ফার্স্ট ক্লাস আছে। সবসময় সৎপথে চলি এবং সবাইকে বলি সৎপথে চলতে। সবার ভাল চাই। তারপরে আমার সঙ্গে কেন এরকম করল ভগবান না কে কী করল আমি জানি না।’’

কেউ হতদরিদ্র ঘরের, কেউ মধ্যবিত্ত পরিবারের। জেল থেকে মুক্তি মিলেছে। কিন্তু বেকারত্বের এই জ্বালা থেকে মুক্তি মিলবে কবে? সেই দিকেই তাকিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা।সদ্য জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে দেবব্রতর বাড়ি বেলঘরিয়ায়। বাবা ছিলেন কলকাতা পুলিশের ASI, এবছরই অবসর নিয়েছেন। ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে পারছেন না তিনি। জামিনপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীর বাবা অমলেন্দু সিংহ মহাপাত্র বলেন, “পুলিশের বাড়ির ছেলে হয়ে আমার ছেলে পুলিশকে মারতে পারে না।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বাড়ি চন্দন দে-র। ছেলের গ্রেফতারির খবর পাওয়ার পর থেকে বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি।জামিনপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীর বাবা প্রহ্লাদ দে বলেন,”চাকরির পরীক্ষা দিয়েছে। পাস করেছে। এখন সে তো শুধু টিউশন করে।’’


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন: Rajbhawan: 'কোন ক্ষমতাবলে যাদবপুরে সমাবর্তন?' ফের রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে রাজভবন