কলকাতা: ফের যাদবপুর (Jadavpur Convocation) সমাবর্তন নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে রাজভবন। সমাবর্তনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবার আদালতের যাওয়ার ভাবনা রাজভবনের। 'কোন ক্ষমতাবলে যাদবপুরে সমাবর্তন? সমাবর্তনে পড়ুয়াদের কোন ক্ষমতাবলে ডিগ্রি দিলেন সহ উপাচার্য?' সূত্রের খবর, এই সব প্রশ্ন তুলে এবার হাইকোর্টে যাওয়ার ভাবনা রাজভবনের। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ। সমাবর্তনে পাওয়া ডিগ্রির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রাজভবনের।


বেশ কিছুদিন থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। একদিকে  সমাবর্তনের অনুমতি মেলেনি রাজভবনের তরফে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতর বলছিল অনুমতি আছে। গোটা ঘটনা ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছয় শনিবার।নিজেরই নিযুক্ত করা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে আপসারিত করেন রাজ্যপাল-আচার্য সিভি আনন্দ বোস। তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উচ্চশিক্ষা দফতরও। তাতে বলা হয়েছিল, ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে, নিয়ম মেনেই নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী উপাচার্য।

বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন উপাচার্য নিয়োগ মামলা। অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, এই মামলা চলাকালীন আর কোনও অস্থায়ী বা অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না আচার্য-রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। উচ্চশিক্ষা দফতরের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে সেই নির্দেশের প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রবিবার সমাবর্তনের মঞ্চে উঠে পড়েন সদ্য অপসারিত অন্তর্বর্তী উপাচার্য। অন্যদিকে, শুরু হয় কোর্ট বৈঠক। সেখানে হাজির ছিলেন বুদ্ধদেব সাউ। কোর্ট বৈঠকে তাঁকেই সমাবর্তনের দায়িত্ব পালনের জন্য আবেদন করা হয়। সমাবর্তন মঞ্চে দেখা যায়, বসার আসনে উপাচার্য হিসেবেই পরিচয় দেওয়া হয়েছে বুদ্ধদেব সাউকে। তাঁর বা-দিকের দুটি চেয়ারের প্রথমটিতে আচার্য-রাজ্যপালের জন্য এবং দ্বিতীয়টি UGC-র চেয়ারম্যান এম জগদীশ কুমারের জন্য বরাদ্দ ছিল। কিন্তু কলকাতায় থাকলেও, তাঁরা কেউই সমাবর্তনে আসেননি।

অন্যদিকে রাজভবন সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সমৃদ্ধি নষ্ট করার জন্য অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অপসারণ করেছেন আচার্য। পড়ুয়াদের অনুরোধকে মর্যাদা দিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান তিনি বাতিল করেননি। এর জন্য আইনি পরামর্শও নেন আচার্য। এরপরইপ্রশ্ন ওঠে, যে অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে তাঁরই নিয়োগকর্তা আচার্য বরখাস্ত করেছেন, তাঁর হাত দিয়ে ডিগ্রি দেওয়া কতটা আইন সম্মত?  এই অবস্থায় শিক্ষকদের একাংশের তরফে দাবি ওঠে, সহ উপাচার্য, যার নিয়োগ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই, সেই অমিতাভ দত্তকে দিয়ে ডিগ্রি দেওয়ানো হোক। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৪ হাজার ৫৪২ জন ছাত্রছাত্রীকে ডিগ্রি দেওয়া হয়েছিল।  যদিও যে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে সদ্য অপসারিত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়েরই সই ছিল। প্রশ্ন ওঠে, এটা নিয়ে কি ভবিষ্যতে কোনও আইনি জটিলতা হতে পারে? এই আবহেই এবার সমাবর্তনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবার আদালতের যাওয়ার ভাবনা রাজভবনের।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন: BJP Meeting: বঙ্গ সফরে অমিত শাহ-জে পি নাড্ডা, দিনভর একগুচ্ছ কর্মসূচি