কলকাতা: উৎসবের নাম করে ক্যাফেতে (Cafe) তোলাবাজির অভিযোগ। টাকা না দিলে ভাঙচুরের হুমকি। যোধপুর পার্কের (Jodhpur Park) ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা-সহ ৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বিতর্কের জেরে যোধপুর পার্ক উৎসব বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘক্ষণ ধরে আঙুল উঁচিয়ে শাসানি! ছবি তুলতে গেলে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা! খাস কলকাতায় উৎসবের জন্য বিজ্ঞাপন চেয়ে তোলাবাজির অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম করে ক্যাফেটেরিয়ার মালিকের থেকে টাকা দাবি।
চেক রেডি না রাখলে ক্যাফেতে ভাঙচুর চালানোর হুমকি।
থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে, রাস্তায় ফলো করার অভিযোগ উঠল বাইকবাহিনীর বিরুদ্ধে। এমনই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের ক্যাফেটেরিয়া ‘আবার বৈঠকের’ মালিক।
অভিযোগকারিণী ক্যাফেটেরিয়ার মালিকের কথায়, প্রথমে শনিবার কাউন্টারের সামনে ৫-৬ জন এসেছিল। এনার কাছে চার্ট দেওয়া হয়, বলে মালিককে চেকটা রেডি রাখতে বলো। না দিলে দেখেছিস তো কেমন ভাঙচুর হয়েছে।
অভিযোগ, যোধপুর পার্ক উৎসবের জন্য বিজ্ঞাপনের নামে শনিবার ক্যাফে মালিককে এই রেট চার্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে এক লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রেট নির্দিষ্ট করা রয়েছে।
অভিযোগ, শনিবার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর বুধবার ফের কয়েকজন এসে জানতে চান, চেক তৈরি আছে কি না? ক্যাফে মালিকের দাবি, টাকা দিতে পারবেন না জানানোয় রাতে আরও কয়েকজন এসে ক্যাফের সামনো জড়ো হন। দেওয়া হয় হুমকি।
সেই ঘটনার ছবি ক্যাফের সিসি ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মালিক ও অন্যান্য কর্মীদের আঙুল উঁচিয়ে শাসাচ্ছেন একজন। ক্যাফে মালিকের দাবি, যিনি হুমকি দিচ্ছিলেন তিনি হলেন বিজয় দত্ত। এলাকায় যিনি তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। এখানেই শেষ নয়, ঘটনার ভিডিও করতে গেলে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ।
ঘটনার কথা রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান ক্যাফের মালিক। লেক থানায় যান অভিযোগকারিণী। অভিযোগ, থানা থেকে ফেরার পথে পিছু নেন অভিযুক্তরা। ঘটনা জানাজানি হতেই তৎপর হয় প্রশাসন। তোলাবাজি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে, তৃণমূল নেতা বিজয় দত্ত-সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাকিরা হলেন ভূপাল মণ্ডল, সনৎ নস্কর, ঝন্টু সিং, শত্রুঘ্ন মাহাতো। ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী দাস, একটি ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করেছেন, আমি বিষয়টা কিছুই জানতাম না। আমাকে এখানে জড়াবেন না। আমি কোনওরকম টাকা তোলাকে সমর্থন করি না। ওরা আমার অনুগামী নয়। আমি পার্টিতে নতুন, তাই আমার অনুগামী তৈরি হয়নি। শেষে তৃণমূল কাউন্সিলর দাবি করেছেন, বিজয় দত্তকে তিনি পার্টির সিনিয়র লিডার হিসেবেই জানেন।
সূত্রের খবর, বিতর্ক শুরু হতেই, যোধপুর পার্ক উৎসব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৯ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি যা হওয়ার কথা ছিল।