সুকান্ত দাস, হিন্দোল দে ও সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, জয়নগর: নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর। ফের পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ। ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হল ফাঁড়িতে। এসডিপিও সহ পুলিশকর্মীদের তাড়া করলেন গ্রামবাসীরা। ভাইরাল হল, কুলতলির তৃণমূল বিধায়ককে তাড়া করার ভিডিও।
'ধর্ষণ-খুনে'র অভিযোগে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর। ফের গাফিলতির অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের পাশাপাশি, তাড়া খেলেন তৃণমূল বিধায়ক। তৃণমূল সাংসদ শুনলেন গো ব্যাক স্লোগান।
কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন এই ক্ষোভের আগুন?
পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ প্রথমে গুরুত্বই দেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, 'ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। বলে, তোমরা কুলতলির লোক, জয়নগরে আমরা নেব না। তোমাদের কেস, তোমরা কুলতলি যাও।'
যদিও বারুইপুর পুলিশ জেলা সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, '৯টার সময় আমরা খবর পেয়েছি। ভোর ৩টে নাগাদ আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলাম। অভিযুক্ত স্বীকার করল। তারপর মৃতদেহ আমরা উদ্ধার করলাম সাড়ে ৩টে নাগাদ। করার পর সব প্রক্রিয়া কিন্তু আমরা দ্রুত করেছি।'
আর জি কর-কাণ্ডের তদন্তে প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে গাফিলতি ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ। পে লোডারে পিষ্ট হয়ে, নবম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুতে, বুধবার বাঁশদ্রোণীতে ক্ষোভের মুখেও পড়েছিল পুলিশ। এরপর ১৬ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবারই নিউটাউনের যাত্রাগাছিতে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। আর শনিবার সকালে ক্ষোভের ছবি ধরা পড়ল জয়নগরে।
আরও পড়ুন, 'RG Kar-এ যা করতে পেরেছিল, এখানে তা করতে পারেনি', জয়নগরকাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ দীপ্সিতার
কিন্তু কেন বার বার পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় উঠছে প্রশ্ন? প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, 'মানুষের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা হয়ে গেছে যে আইনের শাসনটা নেই আর। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধারণাটা গেঁথে গেছে। মনে রাখতে হবে, আইনের শাসনটাকে প্রয়োগ করে পুলিশ। সুতরাং ক্ষোভ-বিক্ষোভ যা কিছু, সব পুলিশকে নিয়েই হবে। সুতরাং পুলিশকে সহজেই চিহ্নিত করে, পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের এই ক্ষোভটা কিন্তু চলছে। আর যা পরিস্থিতি দিনে দিনে কিন্তু এটা বাড়বে। পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। নিজেদের পারদর্শীতা দেখাতে হবে, সহমর্মিতা দেখাতে হবে, মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।'
এদিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় কুলতলি থানার IC সতীনাথ চট্টরাজ-সহ ১২ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। বারুইপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে