কলকাতা: সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের জন্য ED কে নির্দেশ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। বোর্ড গঠন করে শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য ইডিকে নির্দেশ আদালতের, আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানি। 'আপনারা তো দিল্লি এইমস থেকে কাউকে আনবেন না, এখানে কমান্ড হাসপাতাল সহ আরও হাসপাতাল আছে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন', মন্তব্য বিচারপতির। কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে কী হবে?', প্রশ্ন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীর।
'এসএসকেএম আছে তো, এখানকার অন্যতম সেরা হাসপাতাল, আপনি তো বাড়িতে নেই', মন্তব্য বিচারপতির। 'যে চিকিৎসককে দেখাতে চাইছে তাঁর অন্তত একটা প্রেসক্রিপশন দেখান', সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীকে প্রশ্ন বিচারপতির। 'নেই, এটা একটা জরুরি পরিস্থিতি, আমি আমার পছন্দমত হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাই,' সওয়াল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীর। বোর্ড গঠন করতে সাতদিন কেন লাগবে ? কালকেই করা হোক', সওয়াল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীর। মুখ্যমন্ত্রী অসুস্থ হয়েছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে বোর্ড গঠন করা হয়েছে', সওয়াল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীর। উনি মুখ্যমন্ত্রী, আর আপনি একজন অভিযুক্ত', মন্তব্য বিচারপতির।
কিছুদিন আগে হাসপাতাল থেকে ইডি-র বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর আর্জি ছিল, চিকিৎসকরা তাঁকে জানিয়েছেন ৩টি ধমনীতে ব্লকেজ রয়েছে। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চেয়ে জামিন মঞ্জুরের আবেদন জানান কালীঘাটের কাকু। আজই ইডি-র বিশেষ আদালতে জামিন-আবেদনের শুনানি। ইডি সূত্রে খবর, জামিনের বিরোধিতা করবে তারা। পাশাপাশি, আগামীকালই সুজয়কৃষ্ণর বিরুদ্ধে তারা চার্জশিট জমা দিতে চলেছে। চার্জশিটে কালীঘাটের কাকুর যাবতীয় সম্পত্তির হিসেব, নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি কীভাবে জড়িত, তার তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হবে।
এদিকে কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল ইডির চার্জশিটে। ED-র দাবি, কালীঘাটের কাকু, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নিয়ন্ত্রিত দুটি সংস্থা, ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড ও মেসার্স আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেডে গত পাঁচবছরে কোটি কোটি নগদ টাকা জমা পড়েছে। পাশাপাশি, ইডি সূত্রে খবর, কালীঘাটের কাকুর বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করতে চলেছে তারা।
চার্জশিটে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম উল্লেখ করে ইডি দাবি করেছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এবার কাকুর বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল ইডির চার্জশিটে। ED-র দাবি, কালীঘাটের কাকু, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নিয়ন্ত্রিত দুটি সংস্থা, ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড ও মেসার্স আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেডে গত পাঁচবছরে কোটি কোটি নগদ টাকা জমা পড়েছে। পাশাপাশি, ইডি সূত্রে খবর, কালীঘাটের কাকুর বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করতে চলেছে তারা।
চার্জশিটে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে,২০১৮ থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত কালীঘাটের কাকুর নিয়ন্ত্রিত দুটি সংস্থা, ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড ও মেসার্স আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেডে জমা পড়েছে ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। যার গোটাটাই ক্যাশ। কখনও ২০, কখনও ৩০, কখনও বা ৪০ লাখ, এভাবেই প্রতিবছর টাকা জমা পড়েছে কাকুর নিয়ন্ত্রিত এই দুটি সংস্থায়। এই বিপুল পরিমাণ নগদের উৎস কী? ইডি-র অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকাই বিভিন্ন সময় ধাপে ধাপে জমা করা হয়েছে।
চার্জশিটের ৮৮ ও ৮৯ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, কাকুর নিয়ন্ত্রিত ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেডে শুধুমাত্র অনলাইন ট্রান্সফারে জমা করা হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। আশ্চর্যজনকভাবে, টাকা এসেছে যে সব অ্যাকাউন্ট থেকে, সেগুলির কোনও অস্তিত্ব নেই। অর্থাৎ, এককথায় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট।
ইডি-র অনুমান, নগদ ও অনলাইন ট্রান্সফার মিলিয়ে ঘুরপথে প্রায় ৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে কাকুর নিয়ন্ত্রিত দুটি সংস্থায়। পাশাপাশি, এবার কালীঘাটের কাকুর বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চলেছে ইডি। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, এখনও পর্যন্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর ১১টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। চার্জশিটে ২৯, ৩০ ৩১ নম্বর পাতায় কাকুর ১১টি সম্পত্তির উল্লেখ করেছে ইডি। এর মধ্যে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট, বিভিন্ন জায়গায় জমি। এই সমস্ত সম্পত্তিই কেনা হয়েছে কালীঘাটের কাকু, তাঁর স্ত্রী বাণী ভদ্র ও কাকুর নিয়ন্ত্রিত দুটি কোম্পানি ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড ও মেসার্স আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে।