সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: 'আদালতের নির্দেশ মানার ইচ্ছে আছে কিনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানান', রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। আগামীকাল বিকেল ৩টের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে, নির্দেশ মুখ্যসচিবকে। উত্তরবঙ্গ মহিলা ঋণদান সমিতির দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলার চাপ থাকায় রাজ্যের ১০ জন পুলিশ অফিসারকে ডেপুটেশনে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তদন্তের স্বার্থে ওই মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। নির্দেশনামা মুখ্যসচিবের অফিসে পাঠান হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল।
আর যা...
প্রথমে ৩ নভেম্বর এবং পরে ৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ জানানো হয়। এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য সরকার, আজ অভিযোগ করে সিবিআই। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যসচিবকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। প্রসঙ্গত, গত ২৪ অগাস্ট, আলিপুরদুয়ারের সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির মামলায় CBI-ED-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের আইনজীবী সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়, ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত নথি CBI ও ED-র হাতে তুলে না দিলে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকেও এজলাসে ডেকে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেন। নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে CID'কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। বিষয়টি নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সেখানেও ধাক্কা খায় রাজ্য। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রেখেই রায় দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে জানায় ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে না CID-কে। পাশাপাশি, CID-র বিরুদ্ধে করা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যও নির্দেশনামা থেকে অপসারণ করে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাকিম বদলালেও হুকুম যে বদলাচ্ছে না, তার ইঙ্গিত অবশ্য আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল। আলিপুরদুয়ারের সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত করবে CBI-ED, সে ব্যাপারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রেখেই, রায় দিল হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির মামলায় ফের ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। তবে, CID-কে স্বস্তি দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ খারিজ করে এই বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে চলছিল মামলার শুনানি। গত সেপ্টেম্বর মাসে সেই মামলার রায় দিয়ে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ ভার্চুয়াল মাধ্যমে নির্দেশ দেয়, আলিপুরদুয়ারের সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চালাবে CBI ও ED।
আরও পড়ুন:'আমি ভাগ্যবান, আমি এখন সাংসদ নই', কেন বললেন মমতা?