কলকাতা: 'ইডি যাঁর কাছে গিয়েছিল, আশা করব তিনি রাত ১২টার মধ্যে ইডির কাছে হাজিরা দেবেন। এটা আমার আশা', সন্দেশখালির ঘটনা ঘিরে বাংলা যখন তোলপাড়, তখন এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly On Sheikh Shahajahan)। সঙ্গে সংযোজন, 'বাড়িতে শাহাজাহানকে তো পাওয়া যায়নি। তিনি এতই সাহসী যে ইডির ভয়ে কোথায় চলে গিয়েছিলেন। সেই বীরপুঙ্গব ইডির দফতরে হাজিরা দেবেন, এটা আমার আশা', মন্তব্য বিচারপতির। 


বিচারপতির কথায়...
এদিন রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে যাওয়া ইডি আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরও আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। খবর সংগ্রহের কাজে গিয়ে পার পায়নি সংবাদমাধ্যমও। এবিপি আনন্দর চিত্র সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করা হয়, ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা। কেড়ে নেওয়া হয় লাইভ সম্প্রচারের সরঞ্জাম। বিষয়টি নিয়ে আগেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। প্রশ্ন তুলেছিলেন, 'রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা আছে বলে আপনার মনে হয়?' সেই সুরেরই অনুরণন শোনা গেল রাতেও। বলেন, 'পরিকল্পনা না করলে এভাবে আক্রমণ করা যায় না-- নিশ্চয়ই তদন্তে উঠে আসবে।'
ইডির তরফে এদিনের হামলা নিয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ২৭ জন সদস্যের উপর প্রায় ৮০০ জন চড়াও হয়েছিল। এরা কারা? এই নিয়েও সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রশ্ন এখানেই শেষ নয়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, 'মা মাটি মানুষের সরকার এই তদন্ত আটকাতে কত টাকা আদালতে খরচ করেছে আমি জানতে চাই।' সঙ্গে সংযোজন, 'আমি মনে করি, সময় এসে গিয়েছে এই স্টেটে কনস্টিটিউশাল মেশিনারি ভেঙে পড়েছে।' তবে তাঁর বিশ্বাস, এই ঘটনায় পোড়খাওয়া অফিসারদের মনোবল ভাঙা যাবে না। বরং তা বাড়বে। 


যা ঘটেছিল...
শুক্রবার সকালে, শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে বারবার ডাকাডাকি করা সত্ত্বে কারও সাড়া মেলেনি বলে জানান ইডি আধিকারিকরা। ১ ঘণ্টা এভাবে অপেক্ষার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করে। এর পরই বিপত্তি। অভিযোগ, সকাল ৮টা ১০ নাগাদ নাগাদ শয়ে শয়ে শাহজাহানের অনুগামী বাড়ির সামনে জড়ো হয়। তার পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর চড়াও হয় তারা।  মারতে মারতে এলাকাছাড়া করা হয় ইডি আধিকারিক, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। খবর করতে গেলে এবিপি আনন্দর চিত্র সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করা হয়, ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা। কেড়ে নেওয়া হয় লাইভ সম্প্রচারের সরঞ্জাম। গোটা ঘটনায় তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায় রাজ্যে।


 


আরও পড়ুন:'সংবাদমাধ্যম দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলা খুলে কথা বলছে', বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়