সৌভিক মজুমদার,  কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের ( Calcutta High Court )  বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ( Abhijit Ganguly ) এজলাস থেকে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির দুটি মামলা সরিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সেই দুটি মামলা পাঠানো হল বিচারপতি অমৃতা সিন্হার ( Amrita Sinha ) বেঞ্চে। কিন্তু, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসে থাকা বাকি মামলাগুলির ভবিষ্যৎ কী? এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ বিচারপতিই। 


বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, ' যদি একটা মামলা সরে যেতে পারে ওই গ্রাউন্ডে, তাহলে আরও সব মামলাই সরে যেতে পারে ওই গ্রাউন্ডে। সুপ্রিম কোর্ট এরকম সরিয়ে দিতে পারে। তো সেখানে তো আমার কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত। আমাদের সেটা মানতে হবে।' 


১৩ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত CBI, ED-র। 
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। তার প্রেক্ষিতেই এজলাস বদলের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। কুন্তল ঘোষ সংক্রান্ত মামলায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম তিনি কেন উল্লেখ করেছিলেন, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন বিচারপতি।


আরও পড়ুন : 


প্রবল গ্রীষ্ম বাড়ায় অ্যাজ়মার প্রবণতা, তীব্র হয় কষ্ট, কীভাবে বাঁচবেন


সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, '  মামলায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল নিজে তুলেছে। ' তিনি আরও বলেন, ' এটা তো আমার বানানো, বা কোথাও থেকে, আকাশ থেকে পেড়ে আনা তো কোনও নাম নয়। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলে কি কারও অস্তিত্ব নেই পৃথিবীতে? আমি জানি না। কী বলতে চাইছেন আপনারা। ' 


২৯ মার্চ শহিদ মিনার চত্বরের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় দাবি করেন, সারদাকাণ্ডে ধৃতদের দিয়ে তাঁর নাম বলানোর চেষ্টা হয়েছিল। তিনি বলেন, ' যবে থেকে সারদা হয়েছিল, আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র বসে আছে, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টাডিতে ছিল, কী বলেছেন জানেন এদেরকে? অভিষেকের নাম নাও, ছেড়ে দেব।' 


এরপরই নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত, কুন্তল ঘোষের মুখেও শোনা যায় একই সুর। তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম বলানোর জন্য় চেষ্টা করা হচ্ছে।


এর এক সপ্তাহ পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে উঠে আসে কুন্তল ঘোষ ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম। তারপর প্রাথমিকের দুটি মামলা তাঁর এজলাস থেকে সরানো হলেও, দুর্নীতি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, ' তৃণমূল বলে কিছু আমার কাছে নেই। আমার কাছে আছে দুর্নীতি বা দুর্নীতির না থাকা, এই দুটো। এর বাইরে তো আমি আর কিছু দেখি না। যখন এই ধরনের মামলা আমি বিচার করতে বসি, তখন আমি দেখতে চাই, হয় দুর্নীতি আছে কিনা, আর নয় দুর্নীতি সেখানে নেই কিনা। এই তো ব্য়াপার। এর মধ্য়ে তো অন্য় কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা অন্য় কোনও রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গ বা কোনও সুবিধে নেওয়া, ওসব তো আসে না। সম্পূর্ণ বাজে কথা। ' 


প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলার শুনানি এবার কোন পথে এগোবে, সেদিকেই সবার নজর।


আরও পড়ুন :


 কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের জীবনে অবশ্যই মেনে চলুন এই নিয়মগুলি