সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : 'চাকরি বরখাস্তের ক্ষেত্রে আদালতের কোন তাড়াহুড়ো নেই, তবে কিছু বিনিদ্র রাত কাটাতেই হবে আপনাদের, কারণ দুর্নীতিতে আপনারা উপকৃত হয়েছেন' নবম দশম মামলায় চাকরি যাওয়া শিক্ষকদের একাংশকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ( Justice Biswajit Basu )।
'বিদ্ধ আমার পরিবারও'
আদালতে ৯৫২ জনের একাংশের আইনজীবী বলেন, 'নিশ্চিত একটা বড় দুর্নীতি ( Recruitment Scam ) হয়েছে, আমাদের দিকে তির ছোড়া হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে সুযোগ পেয়েছি ধরে নিলেও, যেভাবে বিধ্বস্ত হতে হচ্ছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়' । আইনজীবীর দাবি, দুর্নীতির নামে আমাদের যে তির ছোড়া হচ্ছে তাতে বিদ্ধ আমার পরিবারও, মন্তব্য ৯৫২ জনের একাংশের আইনজীবী।'এই পদ্ধতিতে সময় লাগবে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে। কিন্তু তার মধ্যে আমার সন্তান স্কুলে যেতে পারবে না। দুর্নীতি দূর করতে আরেকটা অপরাধকে কোথাও প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে না তো? প্রশ্ন ৯৫২ জনের একাংশের আইনজীবীর।
উত্তরে কী বললেন বিচারপতি
'আমরা সেই সমাজে বসবাস করি না যেখান থেকে এর মুক্তি মিলতে পারে, সহানুভূতি চাইবেন না। আজ রায় ঘোষণার দিকে সবাই তাকিয়ে, দেখা যাক কী হয়, মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। নবম দশম মামলায় চাকরি যাওয়া শিক্ষকদের একাংশ নতুন মামলা করেন, সেই মামলায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মাধ্যমিক শেষ হলে আরও চাকরি যেতে পারে বলে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। মাধ্য়মিক চলার মধ্যে ভুয়ো শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করলে পরীক্ষায় তার প্রভাব পড়তে পারে। মাধ্যমিক মিটলে এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমন মন্তব্য করেন বিশ্বজিৎ বসু। সোমবার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বলেন, '২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নবম-দশম শ্রেণিতে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। তার মধ্যে ১০ শতাংশ বা হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। '
ইতিমধ্যে ৯৫২ জনের বিকৃত ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে সিবিআই ( CBI ) । তাঁদের ওএমআর শিট নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনও। ইতিমধ্যেই নবম-দশম শিক্ষক পদে ওই ৯৫২ জনের মধ্যে, ৮০৫ জনের চাকরি বাতিল নিয়ে পদক্ষেপ শুরু করেছে এসএসসি। ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, প্রথম ধাপে ৬১৮ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন ( SSC ) ।