সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মী খুনের মামলায় রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত (Justice Jay Sengupta On Sandeshkhali BJP Workers) । বিচারপ্রক্রিয়ায় আদালতের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নিম্ন আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিল সিআইডি? প্রশ্ন করলেন বিচারপতি। সঙ্গে আরও প্রশ্ন, তদন্তকারী আধিকারিকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করব? বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'নিম্ন আদালত কী ভাবে চার্জশিট গ্রহণ করল? অবিলম্বে ওই অতিরিক্ত চার্জশিট প্রত্যাহার করা উচিত।' গত ১৭ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ায়  অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আদালত। আগামী ৩ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। 


প্রেক্ষাপট...
এর আগেও এই মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকা। গত মাসের শেষ দিকেও মামলার শুনানি চলাকালীন পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। কেন ওই তিন বিজেপি কর্মী খুনের মামলার চার্জশিটে শেখ শাহজাহানের নাম বাদ গিয়েছে, এই নিয়ে সে বার তীব্র সমালোচনা করে হাইকোর্ট। জবাবে পুলিশ জানিয়েছিল, শাহজাহানের নাম করলেও, সাক্ষীরা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। তাই শাহজাহানের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একথা শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেছিলেন, টআপনিই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন যে, সাক্ষী বিশ্বাসযোগ্য নয়!' তার পর এদিন ফের ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। 


ফিরে দেখা...
২০১৯ সালে লোকসভা ভোট পরবর্তী হিংসায় সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে ৩ বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় FIR-এ নাম ছিল শেখ শাহজাহানের। ন্য়াজাট থানায় খুন ও অস্ত্র আইনে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি দু'দলই থানায় FIR করেছিল। তৃণমূলের তরফে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাদের প্রত্য়েকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হলেও, বিজেপির অভিযোগপত্রে নাম থাকা শেখ শাহজাহানের নাম ছিল না চার্জশিটে!  সন্দেশখালি সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় রাজ্য সরকারের আইনজীবী গত ফেব্রুয়ারি মাসে অবশ্য দাবি করেছিলেন, শেষ ৪ বছরে ৪৩টি FIR হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টিতে চার্জশিট হয়েছে। ধর্ষণের ধারাও যুক্ত আছে। বাকি তদন্ত চলছে। জমি দখলের অভিযোগে ৭টি FIR হয়েছে। সেগুলিতে চার্জশিট হয়েছে। ৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪টি FIR হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, 'তার মানে ৪ বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরণ ঘটেছে।' সন্দেশখালি নিয়ে গত ৫ জানুয়ারির পর থেকে অন্য একটি কারণে তেতে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। আর তার পর থেকে টানা শিরোনামে থেকেছে ওই এলাকা। এবার ৩ বিজেপি কর্মী খুনের মামলা ঘিরে ফিরে আলোচনায় এই এলাকা।


আরও পড়ুন:'আদর্শ আচরণবিধি ভেঙেছেন দিলীপ ঘোষ', জানাল কমিশন, সতর্ক হওয়ার নির্দেশ