সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : 'লোন লাগবে ? আপনার জন্য প্রি-অ্যাপ্রুভড পার্সোনাল লোন আছে। গাড়ি কিনবেন ? বাড়ি ? ক্রেডিট কার্ড? ' এমন ফোন পান না, এমন মানুষ আছেন? একেক সময় হয়ত মাথা গরম করে রেখেও দেন ফোন। ওপারের কলারকে হয়ত একটু তিক্তভাবে জবাবও দিয়ে দেন মাঝে মধ্যে। প্রচণ্ড কাজের মধ্যে এই ফোনগুলি অনেক সময়ই সাধারণ মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর ব্যতিক্রম বিচারপতিও নন। এই নিয়ে এজলাসের মাঝেই চূড়ান্ত বিরক্তি প্রকাশ করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার ঘটেছে এই ঘটনা। একটি মামলার শুনানি চলাকালীন ভরা এজলাসেই রাজ্যের কৌঁশলিকে জানালেন নিজের বিরক্তির কথা।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মঙ্গলবার এজলাসে বসেই বিরক্তি প্রকাশ করলেন ব্যাঙ্ক থেকে আসা এরকম সেলস কলগুলি নিয়ে। জানালেন ব্যাঙ্ক থেকে লোন আর ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আর্জি নিয়ে লাগাতার ফোনে নাজেহাল তিনি। অন্য একটি মামলার শুনানির মধ্যে রাজ্যের কৌঁশলিকে বিচারপতি মান্থা বলেন,' প্রতিদিন সকাল থেকে সাত - আটবার করে দু'টি ব্যাঙ্কের নামে ফোন করা হচ্ছে, এটা রীতিমতো হেনস্থার পর্যায় পৌঁছেছে। দয়া করে একটা কিছু করুন। এইভাবে ব্যাংকের লোন ও ক্রেডিট কার্ডের নামে হেনস্থা হচ্ছি।'
বিচারপতি মান্থা বলেন, 'এমনকি নম্বর ব্লক করলে অন্য কোনও নম্বর থেকে সেই একই ভাবে কল আসছে। আবার কোনও কোনও নম্বর আইডেন্টিফাই পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। এইভাবে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে ফোনের জ্বালায় চরম নাজেহাল হচ্ছি। একটা কিছু করুন',কার্যত কাতর আবেদন করেন সরকারি কৌঁশলিকে।
শুধু বিচারপতি মান্থা নন, মঙ্গলবার কোর্টরুমে হাজির থাকা অন্যান্য আইনজীবীরাও সায় দেন বিচারপতির কথায়। জানান, তাঁরাও নাজেহাল। একই রকমের ফোন তাঁদের কাছেও আসে লাগাতার। তাতে তাঁরাও বিরক্ত।
ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রমোশন ও সেলস কল নিয়ে বিব্রত অনেকেই । অনেক ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের নামে অনেক প্রতারণা-চক্রও এভাবে জাল বিস্তার করে। এর ফাঁদে পড়েন বহু মানুষ। অনেক ক্ষেত্রেই নম্বর ব্লক করেও লাভ হয় না। নানা নম্বর থেকে আসতেই থাকে লোন নেওয়ার আর্জি, ইনস্যুরেন্স সংস্থার ফোন। এবার এই সব ফোন নিয়ে বিরক্ত বিচারপতিও। এবার কি তবে কোনও সুরাহা হবে ?
আরও পড়ুন :