সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : রেশন দুর্নীতিতে (Ration Scam) ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা কোথায় হবে ? এ প্রশ্নকে সামনে রেখে টানাপোড়েন চলছিলই। জল গড়িয়েছিল আদালতে (Calcutta High Court)। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আদালতের মধ্যেই তুমুল বিতর্কে জড়াল দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ED এবং কমান্ড হাসপাতাল। তবে দু'পক্ষের বক্তব্য শোনার পর, আপাতত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা কমান্ড হাসপাতালেই করানোর নির্দশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)।


বৃহস্পতিবার শুনানি শুরু হতেই ED-র আইনজীবী বলেন,  কেন্দ্রের দুই মন্ত্রকের মধ্যে কোনও সমস্যা হলে, তার সমাধানের জন্য কেন্দ্রের কাছে যায়। তবে সেটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। ইডির আইনজীবীকে বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন, তারা কী চান। উত্তরে ইডি (ED) জানায়, তাদের কিছু বলার নেই। এটা কমান্ড হাসপাতালের (Command Hospital) আবেদন মামলা। বিচারপতি কমান্ড হাসপাতালের আইনজীবীকে জিজ্ঞেস করেন, ওয়ে আউট কী ? কতদিন বাদে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয় ?


একদিন অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা (Health Examination) করাতে হয় বলে জানায় কমান্ড কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি কমান্ড হাসপাতালের আইনজীবী বলেন, অন্য কেন্দ্রীয় হাসপাতালেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হতে পারে। এটা (কমান্ড হাসপাতাল) শুধুমাত্র সেনার জন্য। এখানে কোনও সিভিলিয়ানরা ঢুকতে পারে না। একমাত্র রাজ্যপাল আসতে পারেন। তিনি আরও বলেন, এখানে (কমান্ড হাসপাতাল) রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা মিডিয়া ঢুকতে পারে না। কল্যাণী AIIMS, ESI, সল্টলেক BSF-সহ অনেক কেন্দ্রীয় হাসপাতাল রয়েছে। নিম্ন আদালতে আমাদের কথা শোনা হয়নি।


ইডির আইনজীবী বলেন, এখানে আদালত রায় দিয়েছে। একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দূরে নিয়ে যাওয়াটা তাঁদের পক্ষে সমস্যার। পাল্টা সেনা হাসপাতালের তরফে বলা হয়, তারা সমস্ত ফোর্সের চিকিৎসা করেন। অসম রাইফেলসের জওয়ানদের চিকিৎসাও করা হয়। সেইসময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাস্থ্যপরীক্ষার দিন কবে নির্ধারিত হয়েছে, তা জানতে চান বিচারপতি। কমান্ড কর্তৃপক্ষ জানায় শনিবার। 


একথা শুনে বিচারপতি দু'পক্ষকেই প্রশ্ন করেন, আপনারা দুই বিভাগের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করছেন না কেন ? এরপরই তর্কে জড়িয়ে পড়েন দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রতিনিধিরা। ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত কমান্ড হাসপাতালেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর আবেদন জানান ইডির আইনজীবী।


কিন্তু বিরোধিতা করে কমান্ড হাসপাতাল। তারা বলে, না, এটা হবে না। রেলওয়ে হাসপাতাল আছে, ESI আছে। পাল্টা যুক্তি দেয় ইডি। তাদের আইনজীবী বলেন, অভিযুক্ত যদি বলে তাঁর সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। ESI উপযুক্ত হাসপাতাল নয়। এরপরই বিচারপতি হস্তক্ষেপ করে, কমান্ড হাসপাতালের আইনজীবীকে বলেন, আপাতত দু'দিন চিকিৎসা করুন। নিম্ন আদালতে আপনাদের আবেদন বিচারাধীন। এছাড়া যাতে কোনও সিভিলিয়ান কমান্ড হাসপাতালে ঢুকতে না পারে, তা দেখার জন্য পুলিশকে নজর রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি।


আরও পড়ুন- রোহিঙ্গাদের ভারতে ঢুকিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার ! মানব পাচারের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য এনআইএ-র হাতে