প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: প্রেসিডেন্সি জেলের একই ওয়ার্ডে থাকা সত্ত্বেও জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যদের সঙ্গে দেখা করতে নারাজ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriyo Mullick)। জেল সূত্রে খবর, পয়লা বাইশ ওয়ার্ডে ঢোকার সময় আপত্তি জানান প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী।


দেখা করতে নারাজ: প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর, পয়লা বাইশের সাত নম্বর সেলে রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২ নম্বর সেলে রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া এই পয়লা বাইশেই রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহারা। জেলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাতে অনীহা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। জেল সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের জন্য বারবার আবদার করেন জ্যোতিপ্রিয়। জেল আধিকারিকদের ওপর প্রভাব খাটাতে একাধিকবার রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর নাম নেন। যদিও রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত মন্ত্রীর কোনও অনুরোধ, তর্জন-গর্জনই ধোপে টেকেনি। শেষ পর্যন্ত পয়লা বাইশ ওয়ার্ডের ৭ নম্বর সেলেই ঠাঁই হয় জ্যোতিপ্রিয়র। 


এদিকে নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করে, SSKM হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গতকাল, প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, জেল সূত্রে দাবি, আদালতের নির্দেশে রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রবিবার সন্ধে ছটা নাগাদ প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়। আর তখন থেকে রাত আড়াইটে পর্যন্ত কখনও সেলে থাকা আর কখনও খাবার নিয়ে কার্যত নাটক চলে।জেল সূত্রে খবর, প্রেসিডেন্সি জেলের পয়লা বাইশের সাত নম্বর সেলটি বরাদ্দ করা হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককের জন্য।

সূত্রের দাবি, রবিবার সন্ধেয় তাঁকে যখন ওই সেলের সামনে আনা হয়, তিনি চেঁচিয়ে বলে ওঠেন, আমি এই সেলে থাকব? আমি রাজ্যের মন্ত্রী।জেল রাজ্য সরকারের আওতায়। আমি এই সেলে থাকব না। আমার শরীরের বাঁ দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাকে SSKM-এ পাঠিয়ে দেওয়া হোক। উত্তরে জেলকর্মী জানিয়ে দেন, তাঁর জন্য এই সেলই বরাদ্দ করা হয়েছে। তাঁকে সেখানেই থাকতে হবে। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রীকে বোঝানো হয়। শেষে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, সাত নম্বর সেলে ঢোকেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দুটো কম্বলও দেওয়া হয় তাঁকে। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে দাবি, এরপর রাতের দিকে শুরু হয় আরেকপ্রস্থ নাটক।৯টা নাগাদ, মন্ত্রীকে বলা হয়, তাঁর বাড়ি থেকে খাবার চলে এসেছে। খেয়ে নিতে। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় বলেন, তিনি খাবেন না। তাঁর ওষুধ দিয়ে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। সূত্রের দাবি, জেলের চিকিৎসকের তরফে বলা হয়, খাবার না খেলে ওষুধ দেওয়া যাবে না। শেষমেষ রাত আড়াইটে নাগাদ, খাবার খান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। 


আরও পড়ুন: Train Fire: ফের আগুন আতঙ্ক, হাওড়াগামী ট্রেনে ধোঁয়া