ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম:  ৫১ পিঠের অন্যতম সতীপীঠ বীরভূমে  লাভপুরের ফুল্লরা। এখানেও সোমবার কালীপুজো উপলক্ষ্যে ভক্তদের ঢল। সারাবছর এখানে দেবী দুর্গা রূপে পূজিত হয়ে থাকেন। কালী পুজো উপলক্ষে, দেবী দুর্গার পাশাপাশি মা কালী রূপে পুজো হয়ে থাকে মা ফুল্লরার। 


লোকে বলে, বীরাচারীদের ভূমি বীরভূম। পঞ্চসতীপীঠের অন্যতম লাভপুরের ফুল্লরা দেবী। ‘অট্টহাসে ওষ্ঠ পাতো দেবী সা ফুল্লরা স্মৃতা। বিশ্বেশো ভৈরব স্তত্র সর্বাভীষ্ট প্রদায়ক।।’


কলকাতা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে লাভপুর। বীরভূম জেলার এই অংশ প্রাচীনকালে অট্টহাস নামে পরিচিত ছিল। এই নাম থেকেই মনে পড়ে, চণ্ডীর ব্যাখ্যায় রয়েছে, অসুর নিধনে দেবীর আবির্ভাব হওয়ার পর তিনি অট্টহাসিতে আকাশ বিদীর্ণ করছেন। অশুভের নিধনে শুভ শক্তির জয়োল্লাস।


সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল এই পীঠে
পীঠ নির্নয় তন্ত্র মতে, এখানে সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল। পীঠ নির্নীত হওয়ার শর্ত অনুসারে এখানে কাদর বা কোপাই নদী উত্তর বাহিনী। স্থানীয়ভাবে এর নাম লা ঘাটা। বোলপুর থেকে লাভপুর যাওয়ার পথে ডানহাতে নতুন এই তোরণ নির্মীয় হয়েছে। সেখান থেকে কিলোমিটার খানেক ভিতরে ঢুকলে মূল মন্দির। মন্দির চত্বর খুব প্রশস্ত নয়। গর্ভগৃহের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। জগমোহনে রয়েছে হাড়ি কাঠ। তবে এই মন্দির চত্বরের মধ্যে মূল তোড়ণের পাশের শিব মন্দিরটি সবচেয়ে পুরনো। নাটমন্দিরের পড়েই রয়েছে মায়ের ঘাট।

দেবী এখানে সারা বছর দুর্গা রূপে পূজিত হয়ে থাকলেও, সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বিশেষ পূজা-অর্চনা ও হোমযজ্ঞ। দূরদূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছে ভক্তরাও। ভক্তদের বিশ্বাস  এখানে প্রাণভরে মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে তা পূর্ণ হয়। এই মনের কামনা নিয়েই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসেছেন কালীপুজোয় এখানে পুজো দিতে।