সন্দীপ সরকার, বিজেন্দ্র সিংহ, সৌভিক মজুমদার, কালিয়াগঞ্জ: মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের পরই, রাতে বাড়িতে এসেছিল পুলিশ। গুলি করে খুন করেছে ছেলেকে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কালিয়াগঞ্জে নিহত যুবকের মা। একই অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুবধ হয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, পুলিশ কি বালা পরে ছিল?


আর এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি করে এক যুবককে মারার অভিযোগ ওঠার পরই, তাঁর পরিবার মুখ্য়মন্ত্রীর মন্তব্য়কে হাতিয়ার করে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে!


নিহত যুবকের মা জ্যোৎস্না বর্মন বলছেন, তোমরা কি চুড়ি পরে আছ? কেন, চুড়ি পরে আছ কি তোমরা? কেন শায়েস্তা করতে পার না? কেন শায়েস্তা করতে পার না? পুলিশকে বলছিল, থানাকে বলছিল। সেই রাতে ঘটনা ঘটে গেল। আগে আমরা বাইরে দেখছিলাম, এখন আমরা বাড়িতে দেখছি।


এ দিকে পুলিশের হাত থেকে যে জেঠুকে বাঁচাতে গিয়ে, পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই ৭৫ বছরের সবেন বর্মনকেই কালিয়াগঞ্জ থানায় হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


তাঁকে, ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রায়গঞ্জ আদালত। খুনের চেষ্টা, আগুন লাগানো, সরকারি সম্পত্তি লুঠ, সরকারি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ-সহ ধৃতের বিরুদ্ধে ১৯টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।


নিহত যুবকের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল - গুলিটা চালাল কে? তিনি উত্তর দেন পুলিশ চালাল, থানার পুলিশ চালাল। এরপর তাঁকে ফের প্রশ্ন করা হয় ওরা কি ইউনিফর্মে ছিল? উত্তর আসে ইউনিফর্মে ছিল, গাড়ি নিয়ে এসেছিল।


শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার ট্যুইটারে লিখেছেন, গতকাল (বুধবার) বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কালিয়াগঞ্জের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ সেই নির্দেশ পালন করেছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাশুল তাঁকে দিতে হবে।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বিজেপি যে তাণ্ডব করেছে, পুলিশকে বলব দলমত দেখার দরকার নেই। স্ট্রেট অ্যারেস্ট করুক। প্রপার্টি অ্যাটার্চ করতে হবে। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য়সভার সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, মমতা দায়ী এই প্রসঙ্গ ছাড়া অন্য় বাইট এখানে দেবে না। চলে গেল তরতাজা একটা ছেলে। আর কোনওদিন সোহাগ করতে পারবে না মা। এর জন্য় কে দায়ী? তারা কি কোনওদিন শাস্তি পাবে? না কি দুদিন রাজনীতির পর সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে?