সন্দীপ সরকার ও প্রীতম চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ: নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জ। এর প্রেক্ষিতে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ৪টি ওয়ার্ডে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ৪, ৫, ৬ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে শুক্রবার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার চিঠি দিয়ে সব রাজনৈতিক দলকে জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই মুহূর্তে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলায় কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
এখন উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নেতৃত্বে কালিয়াগঞ্জের রাস্তায় পুলিশ টহল দিচ্ছে। এর আগে যে যে বাড়িতে পুলিশ আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই বাড়িগুলিতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিবরণ শোনেন পুলিশ আধিকারিকরা।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:
কালিয়াগঞ্জে উত্তেজনা এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি। গুন্ডামি, জল্লাদগিরি করেছে, পুলিশের মেয়েদের উপরেও হামলা হয়েছে। পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি। মৃতদেহ এভাবে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি, কিন্তু পাথর ছোড়া হচ্ছিল। এবার থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য থানায় ব্যাগ দেওয়া হবে। হামলায় অভিযুক্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে,' হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পনা করে পুলিশের উপর হামলা করা হয়েছে। বিহার থেকে লোক নিয়ে এসে কালিয়াগঞ্জে হামলা করা হয়েছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যু এবং তাঁর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। পুলিশের উপর আছড়ে পড়েছে জনরোষ। থানায় ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে পুলিশকর্মীদের। থানার কাছে বাড়িতে লুকিয়েও রেহাই পাননি পুলিশকর্মীরা। ঘরের মধ্যে ঢোকার পরেও অসহায়ভাবে মার খেয়েছেন পুলিশকর্মীর। খাটের নীচ থেকে, বাড়ির ভিতর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। হাতজোড় করে প্রাণভিক্ষা চেয়েও রেহাই পায়নি পুলিশ। শুধু পুলিশ কর্মীরাই নয়, ছাড় পাননি সিভিক ভলান্টিয়াররাও। প্রাণভয়ে থানা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন পাশের এক বাড়িতে। সেখানে ঢুকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের। রাস্তায় ফেলেও মারা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের।
ডিজিপিকে চিঠি:
কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে ডিজিপিকে চিঠি জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের। 'ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত নির্যাতিতা নাবালিকার পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে, মৃত নির্যাতিতা নাবালিকার মা-বাবার পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়েছে। এটা অপেশাদারিত্বের চূড়ান্ত নিদর্শন। অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন', ডিজিপি-কে চিঠি প্রিয়াঙ্ক কানুনগোর।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে সন্তানের কাছে গিয়েছিলেন মা-বাবা, ফেরার আগেই হারালেন সব !