কল্যাণী: রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এ বার কল্যাণীতে। সেখানে মায়ের মৃতদেহ ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় এক মাস আগেই মারা যান বৃদ্ধা। সেই থেকে ঘরে দেহটি ফেলে রেখেছিলেন তাঁর ছেলে। অভিযুক্ত যদি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। কী কারমে মৃতদেহ ঘরে ফেলে রাখা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


কল্যাণী এ ব্লকের ঘটনা। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় পাল। কলের পাইপ লাগানোর কাজ করেন তিনি। প্রায় এক বছর আগে অসুস্থ মাকে নিয়ে ওই এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়ায় ওঠেন তিনি। প্রতিদিন ঘরে তালা ঝুলিয়ে কাজে বেরিয়ে যেতেন ওই ব্যক্তি। কাজ সেরে ফিরে আসতেন বাড়ি। 


আরও পড়ুন: Gosaba Tiger: বাঘিনীর গর্জন শুনিয়ে বাঘকে বাগে আনার চেষ্টা, নয়া কৌশল বনদফতরের


তবে ওই ব্যক্তি নিয়মিত বাইরে বেরোলেও, তাঁর মাকে খুব একটা দেখা যেত না। বয়সের ভার এবং অসুস্থতার জেরেই বৃদ্ধা বাইরে বেরোন না বলে জানতেন এলাকাবাসী। কিন্তু সম্প্রতি একেবারেই ওই বৃদ্ধার দেখা মিলছিল না। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে, স্থানীয়দের অভিযুক্ত জানান, একেবারেই হাঁটতে পারছেন না বৃদ্ধা। প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বার বার জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত প্রশ্ন এড়িয়েও যেতেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 


যে ঘরে মাকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন অভিযুক্ত, সম্প্রতি সেখান থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। সন্দেহ হলেও এ নিয়ে অভিযুক্তকে কিছু জিজ্ঞাসা করে উঠতে পারেননি স্থানীয়রা। কিন্তু শনিবার সকালে এত দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে যে, বাড়ির মালিকের সন্দেহ হয়। কল্যাণী থানায় খবর দেন তিনি। পুলিশ এসেই ঘরের মধ্যে থেকে বৃদ্ধার পচা-গলা দেহ উদ্ধার করে। 


বাড়ির মালিকের দাবি, দু'-পাঁচ দিন আগে নয়, নভেম্বর মাসের শেষ দিকে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। এত দিন সে খবর লুকিয়ে রেখেছিলেন অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার দেহ পচে পোকা ধরে গিয়েছিল। 


কল্যাণী থানার পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে। কী কারণে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে, কেনই বা তাঁর দেহ আটকে ছিলেন, তা জানতে অভিযুক্তকে জেরা করছে পুলিশ। তাঁর কোনও মানসিক সমস্যআ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে শান্তিপূর্ণ ওই এলাকায় এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।