অরিত্রিক ভট্টাচার্য, সৌমিত্র রায়, কলকাতা : শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার ( Kanchanjangha Train Accident ) দায় কার? মানুষের ভুলে দুর্ঘটনা? নাকি নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি? এতগুলো প্রাণহানির দায় কার? সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নিজবাড়ি ও চটেরহাট স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে সজোরে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেলের তরফে দায় চাপানো হয় মালগাড়ির চালকের উপর, ওই দুর্ঘটনাতেই যাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আসল কারণ কী? কী কী তত্ত্ব উঠে আসছে ?
কী জানাচ্ছে পূর্ব রেল?
পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, দুর্ঘটনার দিন অর্থাৎ সোমবার ভোর থেকে রাঙাপানি ও আলুয়াবাড়ি স্টেশনের মাঝে স্বয়ংক্রিয় সিগনাল কাজ করছিল না। যখন অটোমেটিক সিগনালিং সিস্টেম কাজ করে না, তখন স্টেশন মাস্টার হাতে লেখা একটি মেমো ইস্য়ু করেন। এই মেমো অনুসারে, সকাল ৮.২০ নাগাদ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে এরকমই 'TA 912' মেমো ইস্য়ু করেছিলেন রাঙাপানি স্টেশনের ম্যানেজার। মালগাড়িকেও 'TA 912' মেমো ইস্যু করা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, হাতে লেখা মেমো ইস্যু করা হলে, প্রত্যেক সিগনালের আগে ১ মিনিট থেকে ২ মিনিট করে ট্রেন থামাতে হয়। তারপর ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা স্পিডে যেতে হবে। তিনি ও তার সামনের ট্রেনটির মধ্যে ১৫০ মিটারের গ্যাপ রাখার কথা। কিন্তু তা সম্ভবত মানা হয়নি। হয়ত তিনি এই গতি সংক্রান্ত বিধি মানেননি, সেই সঙ্গে সিগন্যালে ১ মিনিট করে অপেক্ষা করার নিয়মটিও মানা হয়নি সম্ভবত।
তা সত্ত্বেও প্রশ্ন একটা থেকেই যায়, বিষয়টি কন্ট্রোল রুমের নজর এড়ালো কীভাবে? কার ভুলে এই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটল? তদন্ত শুরু করেছেন রেলওয়ে সেফটির চিফ কমিশনার।
উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার জনককুমার গর্গের তত্ত্বাবধানে কাল থেকে এই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। কারও কাছে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত কোনও তথ্য থাকলে তাঁরা তা তদন্ত কমিশনের কাছে জানাতে পারবেন। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের ADRM-এর অফিসে এই কমিশন বসবে। এ ছাড়াও সুরক্ষা কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েও দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন :