সনৎ ঝা, দার্জিলিং: প্রয়াত নকশাল নেতা কানু সান্যালের (Kanu Sanyal) বাড়ির একাংশ জবরদখলের অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে প্রয়াত নেতার ভিটে মাপজোক করল প্রশাসন। বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটও। আর এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নকশাল আন্দোলনে (Naxalite Movement) স্মৃতি বিজড়িত ওই বাড়িতে কেন পুলিশ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


নকশাল নেতার বাড়ি জবরদখলের অভিযোগ


গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরে দিন বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন যিনি, সেই প্রয়াত নকশাল নেতা কানু সান্যালের বাড়ির একাংশই কিনা জবরদখল হয়ে যাচ্ছে? এমন অভিযোগ আসতেই, গত ২৭ এপ্রিল প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।


ওই বৈঠকে মমতাকে বলতে শোনা যায়, "নকশালবাড়িতে (Naxalbari Movement) কানু স্যান্যালের বাড়ি কার আন্ডারে পড়ে? কানু সান্যালের বাড়ি, কেউ তার বাড়ি দখল না করতে পারে।" এর পরই নড়চড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। পরদিনই অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল নকশালবাড়ির হাতিঘিষায়, কানু সান্যালের ভিটেয় যান সরকারি আধিকারিকরা।


আরও পড়ুন: Weather Update: বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গের একাংশে স্বস্তি ফেরাল কালবৈশাখী


সেখানে পৌঁছে প্রয়াত নকশাল নেতার বাড়ির জমির মাপজোক করেন সরকারি আধিকারিকরা। শুধু জমি মাপাই নয়। বসানো হয় পুলিশ পিকেটও। জীবদ্দশায় যে নেতা পুলিশের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছিলেন, তাঁর ভিটেতেই পুলিশ মোতায়েন নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।


বাড়ি বেদখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করছেন নকশালবাড়ির বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা শান্তি মুন্ডা এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমরা জানি যেমন ছিল তেমন আছে, দখল হয়নি।" তাই পুলিশ বসানো নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় বাসিন্দা তথা কানু সান্যাল স্মৃতি সেবা ট্রাস্টের সদস্য দীপু হালদার বলেন, "পুলিশ কেন রয়েছে তা বুঝতে পারছি না।"


পুলিশ বসানো নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে


সাতের দশকে গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিল নকশালবাড়ি আন্দোলন, তার অন্যতম পুরোধা ছিলেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কানু সান্যাল। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নকশালবাড়ি এলাকার ওই বাড়িতেই মাথা গোঁজেন তিনি। সেখান থেকেই দলীয় কার্যালয় চালাতেন। ২০১০ সালের ২৩ মার্চ সেখান থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মৃত্যুর পর ১২ বছর কেটে গেলেও নকশাল আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ওই বাড়ি দর্শনীয় জায়গা হয়ে উঠেছিল।


সেই বাড়িরই জমি দখলের অভিযোগ উঠছে। আবার প্রয়াত নকশাল নেতার ভিটেয় পুলিশ বসানো নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তবে শিলিগুড়ি শহর এবং গ্রাম লাগোয়া জলপাইগুড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে জমি দখলের একটি চক্র কাজ করছে। তা নিয়ে এর আগেও বারবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।