বিজেন্দ্র সিংহ, সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : বৃহস্পতিবার আর জি কর-মামলায়, সুপ্রিম কোর্টের পরপর প্রশ্নবাণে জর্জরিত হল রাজ্য় সরকার। আর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কার্যত নাস্তানাবুদ হলেন রাজ্য় সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। কখনও টাইমলাইন নিয়ে, কখনও, কখনও ময়নাতদন্তের পর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর মামলা রুজু নিয়ে, বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে কার্যত খাবি খেলেন বর্ষীয়াণ আইনজীবী সিব্বল।
সিব্বলের যুক্তিতে অসন্তুষ্ট শীর্ষ আদালত
শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে, রাজ্যের দেওয়া টাইমলাইন নিয়ে সংশয় আছে। এ নিয়ে কপিল সিব্বল যা সাফাই দিচ্ছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ময়নাতদন্তের পর কী করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগে এফআইআর দায়ের হতে পারে? সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্নবাণে এভাবেই বারংবার বিদ্ধ হলেন রাজ্য় সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। কয়েকবার তো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে, এদিক ওদিক তাকাতে দেখা যায় তাঁকে। তারপর পাতা উল্টে উল্টে উত্তর দিলেও, তাতে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতিরা।
'বিভ্রান্তি তৈরি করবেন না'
ময়নাতদন্ত শুরু হয় সন্ধে ৬.১০-এ। শেষ হয় সন্ধে ৭.১০-এ। এরপর রাত সাড়ে ১১টায় কীভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হল? কপিল সিব্বল, রাজ্য সরকারের আইনজীবী-ওটা এফআইআর। ওটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নয়। বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, অবাক হচ্ছি, ময়নাতদন্তের আগেই বলে দিল অস্বাভাবিক মৃত্যু? এ ভাবে নিজেদের বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করবেন না। পরের বার শুনানিতে কোনও দায়িত্বশীল পুলিশ অফিসারকে এখানে রাখবেন।
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, প্রধান বিচারপতি বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় দেহ উদ্ধার হয়। আর রাত সাড়ে ১১টায় এফআইআর দায়ের হয়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে এফআইআর! এটার কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। কেন ১৪ ঘণ্টা দেরিতে এফআইআর দায়ের হল?
সওয়াল-জবাবের মধ্য়ে কপিল সিব্বল খানিকটা হালকা চালে কিছু বলতে গেলে, সলিসিটর জেনারেল তীব্র ভাষায় তার আপত্তি জানান। তুষার মেহতা আপত্তি জানিয়ে বলেন, 'আপনি হাসছেন কেন? এটা কি হাসির কোনও বিষয়? একটা মেয়ের প্রাণ চলে গিয়েছে। আর সেটাও অত্যন্ত অমানবিক ও বর্বরোচিতভাবে।'
আইনজীবী হিসেবে প্রায় পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতা কপিল সিব্বলের। কিন্তু, আর জি করে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্য় সরকারের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে এভাবেই কার্যত নাস্তানাবুদ হতে হল তাঁকে।
আরও পড়ুন :