কলকাতা : আরজি করে জুনিয়রদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। স্পষ্টতই দ্বিধাবিভক্ত নেটিজেনরা। নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশি দাঁড়িয়েছেন। আবার একটা অংশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলনের মতের সঙ্গে সহমত নন। যেমন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একজনকে 'বিপ্লবী' বলে কটাক্ষ করে সম্প্রতি পোস্ট করেছেন পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর 'মগজ' নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনিকেত । কটাক্ষ করে লিখেছেন, তিনি প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিরাট অঙ্কের বিনিময়ে পড়াশোনা করেছেন। অনিকেত লিখেছেন, 'মগজ নিয়ে কিছু কথা। ১ কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের বিপ্লবী মুখ। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক'। 


এই পোস্ট করার পরই তার কড়া জবাব দিয়েছেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। অনেক নেটিজেনই আবার ধরে নিয়েছেন এই কটাক্ষ আসলে আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দকে উদ্দেশ্য করে। সেই জন্য পরিচালককে অনেকেই কড়া কথা শুনিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। শয়ে শয়ে কমেন্টের পর ওই পোস্টে কমেন্ট করেছেন কিঞ্জল নিজেও। যিনি একাধারে চিকিৎসক, অন্যদিকে বিনোদন দুনিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ।


তিনি লিখেছেন, 'ইচ্ছে হল তাই লিখছি। অনেকেই অনেক কথা বলছেন। সত্যিটা  একটু বলা উচিত। যেহেতু অনিকেত বাবুকে আমি কিছুটা চিনি, আর উনি আমার সিনিয়র। সেই জায়গা থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েই লিখছি। যে বছর আমি জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিই, সেইবছর আমাদের ওয়েস্ট বেঙ্গলে টোটাল সিট ছিল বোধ হয় ৯০০ র কাছাকাছি। তখন এত মেডিক্যাল কলেজ হয়নি। আমি rank করেছিলাম ৮৫৯ (জেনারেল ক্যাটেগরি), কিছুটা শেষের দিকে, জেলার কিছু গভর্নমেন্ট  কলেজে চান্স পাচ্ছিলাম, শেষের দিকে। কিন্তু যেহেতু বাবা-মা একা থাকেন, আমি বাইরে যেতে চাইনি। বরাবরই আমি ঘরকুনো। তারপর কাউন্সেলিংয়ে আমি KPCতে পাই। তখন KPCতে গভর্নমেন্টের ৫০টা সিট ছিল। তারমধ্যে আমি প্রবেশ করি। ৫.৬ বছরে আমার খরচ হয়েছিল ৫ লক্ষ। বিশ্বাস করুন, এই টাকা আমি বাবার থেকে নিইনি। নিজে ব্যাঙ্ক থেকে লোন করেছিলাম। বাকিটা আমি টিউশন করতাম কেমিস্ট্রি ও ম্যাথস। বাবার শিক্ষা তো এমনই ছিল, যে বড় হয়েছ, নিজের খরচ নিজে চালাও। তাই হয়ত পড়াশোনা, টিউশন ও থিয়েটার নিয়েই থাকতাম। ডাক্তারি পাশ করার পর নিজে কাজ করি, সততার সঙ্গে পয়সা রোজগার করে লোন শোধ করেছি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের SBI ব্রাঞ্চ, খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। আপনি পরিচালক, খুব নমনীয় ব্যক্তি, সাধারণ জীবনযাপন করেন, তাই আপনার কাছ থেকে একটু সত্যতা আশা করি। কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করবেন। শ্রদ্ধা নেবেন। আমার বাবা-মা জীবনে একটাই জিনিস শিখিয়েছেন মানুষ হতে।'   


কিঞ্জলের এই উত্তর অনেকেই স্ক্রিন শট নিয়ে ওয়ালে পোস্ট করেছেন। সঠিক খবর নিয়ে কথা বলতে বলে, খোঁচা দিয়েছেন অনিকেতকে। 


আরও পড়ুন :


দেবীপক্ষের শুরুতেই ভিজবে ৭ জেলা, হলুদ সতর্কতায় আপনার জেলাও?