সৌমিত্র রায় ও আবির দত্ত, কলকাতা: দুরন্ত গতিতে ছুটে এসে একের পর এক গাড়িতে ধাক্কা। একধার দিয়ে হেঁটে যাওয়া মহিলাকে চাপা। মুহূর্তের মধ্যে চোখের সামনে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন পথচলতি মানুষ। গাড়ির নীচে গুটিয়ে পড়ে থাকা দেহটি কোনও রকমে বার করে আনা হয় দেহটি (Woman Killed)। প্রশ্ন উঠছে গাড়ির বেপরোয়া গতি নিয়েও। সূত্রের খবর, ১০০ কিলোমিটার বেগে চলছিল ঘাতক জাগুয়ার গাড়িটি। তাতেই শহরের রাস্তায় চলাফেরা আদৌ নিরাপদ কিনা, প্রশ্ন উঠছে (Kolkata News)।

  


শহরে ফের বেপরোয়া গতির বলি প্রাণ


রবিবার দুপুরে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা (Ballygunge Accident) ঘটে গিয়েছে। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটছিল। দুর্ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টিয়ারিংয়ে হাত ছিল এক মহিলার। পরে পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সুযশ পরশরামপুরিয়া।  বাড়ি বালিগঞ্জের সানি পার্ক এলাকায়। ঘাতক জাগুয়ার গাড়িটি আটক করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে দু’জন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জামিন অযোগ্য ধারায় দায়ের হয়েছে মামলা। 


কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তায় বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে জয়রাইডে বেরিয়ে, ট্র্যাফিকের তোয়াক্কা না করে এত গতি তুললেন কী ভাবে চালক! প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ যতক্ষণ না জীবনের মূল্য বুঝবে, অন্যের জীবন, আমার জীবনের পার্থক্য না বুঝবে, ততদিন এমন ঘটনা কমবে না। জানে, এত জোরে চললে মরে যেতে পারে। দু’টো-তিনটে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে তবেই নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’


আরও পড়ুন: Kolkata News: অফিস ছুটির পর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন, শহরে বেপরোয়া জাগুয়ার প্রাণ কাড়ল মহিলার


রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্তও এ ব্যাপারে একমত। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তাঘাট সিসিটিভি ফুটেজে মোড়া। ট্র্যাফিক আগের থেকে অনেক উন্নত। দুপুরে জাগুয়ার, BMW জয়রাইড করে মেরে ফেলল, এটা হতে পারে না। কলকাতা পুলিশের সার্জেন্টরা বিশ্বমানের। কী করে ঘটল? অত্যন্ত লজ্জার। লাইসেন্স বাতিল করে কঠোর অ্যাকশন নিতে হবে।’’


ধৃতের কঠোর শাস্তির দাবি উঠছে


এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে বালিগঞ্জ থানার পুলিশ। চালক মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণও জানা যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ। কিন্তু তাতে যে প্রাণ চলে গিয়েছে, তা কি ফিরে আসবে, প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।  তো ফিরে আসবে না অকালে চলে যাওয়া প্রাণ।