শিবাশিস মৌলিক ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা: কর্মসংস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) চা-ঘুগনি-মুড়ি বিক্রি মন্তব্যের অভিনব প্রতিবাদ। বিজয়া (Vijaya Dashami) পালনের মুহূর্তে বিজেপি-র (BJP) রাজ্য দফতরে বিলি করা হল, চপ-মুড়ি-ঘুগনি। পাল্টা, বিজেপি-র আক্রমণের জবাব দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। আর তৃণমূল-বিজেপি দু’দলকেই কটাক্ষ করেছে সিপিএম (CPM)।


বিজয়া পালনেও রাজনীতির রং বিজেপি-র দফতরে


পুজোর আগে, বিধানসভার সামনে চা-ঘুগনি-মুড়ি বিক্রি করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিজেপি-র নেতা-নেত্রীরা। এ বার বিজয়া পালনেও লাগল রাজনীতির রং। বৃহস্পতিবার বিজয়া পালনে বিজেপি-র রাজ্য দফতরে বিলি করা হল চপ-মুড়ি-ঘুগনি। সঙ্গে ছিল চা, নাড়ু এবং মোমোও।  


এ দিন, বিজেপির রাজ্য দফতরে যাঁরা আসেন, তাঁদের হাতে এই সব খাবার তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, হঠাৎ চপ, মুড়ি, ঘুগনি কেন? রাজ্য বিজেপি নেতাদের দাবি, এটা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ। বিজেপি কর্মী নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এবিপি আনন্দের ক্যামেরার সামনে বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে এটা করছি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাইপো-বাইঝিদের এটা বলতে পারবেন তো?’’


পুজোর আগে একটি মঞ্চ থেকে অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের পরামর্শ দিতে গিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘আমি বলছি, আপনি এক হাজার টাকা নিন, তা দিয়ে একটা কেটলি কিনুন আর কয়েকটা মাটির ভাঁড় নিন। সঙ্গে কিছু বিস্কুট রাখুন। আস্তে আস্তে বাড়বে। প্রথম সপ্তাহে বিস্কুট নিলেন, তারপরের সপ্তাহে মাকে বললেন, একটু ঘুগনি তৈরি করে দাও। তারপরের সপ্তাহে একটু তেলেভাজা করলেন। একটা টুল আরেকটা টেবিল নিয়ে বসলেন। এই তো পুজো আসছে, দেখবেন লোককে দিয়ে কুলোতে পারবেন না।কেউ যদি ব্যঙ্গ করে বলে তুই এটা করছিস? বলবেন এভাবেই আমি কোটিপতি হব।’’



আরও পড়ুন: Firhad Hakim: জলপাইগুড়ি নিয়ে তরজা অব্যাহত, বাবুঘাটে চলছে বিসর্জন, ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখলেন ফিরহাদ


তার পর থেকে লাগাতার মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে অভিনব উপায় বার করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-কে। এ দিন বিজয়াতেও তার রেশ দরা পড়ল। তা নিয়ে বিজেপি-কে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এগুলো যত করছে, ততই বেশি করে বিশাল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষকে অসম্মান করছে। এঁদের অসম্মান করার কোনও অধিকার আমাদের নেই। পৃথিবীর সব দেশে পাকা চাকরির মানুষ যেমন রয়েছেন, তেমননই অসংগঠিত ক্ষেত্রেও বহু মানুষ রয়েছেন।’’


এ নিয়ে আবার তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলকেই আক্রমণ করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ন্যক্কারজনক ভাবে এ কথা বলেছেন, আর বিজেপি-র বিদ্রুপ করছে না? দু’দলই রাজনীতি করছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দায় এড়াচ্ছেন। এটাকে, ওটাকে শিল্প বলছেন উনি। নরেন্দ্র মোদিও তাই করছেন, যোগব্যায়াম করতে বলছেন। দেখতে হবে রাজনীতি করতে গিয়ে কাউকে বিদ্রুপ না করে ফেলেন।’’


দুই দলই শ্রমজীবী মানুষকে বিদ্রূপ করছে, দাবি সিপিএম-এর


এর আগে, বিধানসভার গেটে অভিনব বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। ঝালমুড়ি, ঘুগনি, চায়ের স্চল দেন অগ্নিমিত্রা পাল-সহ দলের বিধায়করা। এ বার তাদের বিজয়া পালনেও জায়গা করে নিল সেই মুড়ি, ঘুগনি।