অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: গার্ডেনরিচে (Garden Reach Building Collapsed) আপাতত বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভাঙা বন্ধ রাখল পুরসভা (KMC)। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে আদালতের শুনানির কারণেই আপাতত ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিন বাড়ি ভাঙতে গেলে পুরসভার কর্মীদের বাধা দেন আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, আগে থেকে কিছু না জানিয়েই বাড়ি ভাঙতে এসেছে পুরসভার কর্মীরা। জমির মালিকের অভিযোগ, বাড়ির বিপজ্জনক অংশ না ভেঙে তাঁর দিকের অংশ ভাঙা হচ্ছে।  


বাড়ি তৈরি নিয়েও বিতর্ক, ভাঙতে গিয়েও বিতর্ক। হেলে পড়া বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভাঙা নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দিল গার্ডেনরিচে। জমির মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন পুলিশ ও পুরকর্মীরা। ৮ আম আগের নোটিস কার্যকর করতে গিয়েও থমকে গেল কাজ। পুরসভা জানিয়েছে, আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে কাজ। 


কদিন আগেই গার্ডেনরিচে বেআইনি বাড়ি ধসে গিয়ে প্রাণ কেড়েছে ১২ জনের। এবার গার্ডেনরিচেই বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভাঙা নিয়ে বিপুল উত্তেজনা তৈরি হয়। ৮ মাস আগে নাকি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সেটা নিয়ে কাজ করতে গিয়েও থমকে যেতে হল। প্রবল বাধার মুখে পড়ে পিছু হঠতে হল পুলিশ ও প্রশাসনকে।  


জমির মালিকের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিপজ্জনক অংশ না ভেঙে বাড়ির ভাল অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছিল। একদিকে যেমন কোনওরকম নোটিশ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তেমনই বাড়িটি উপর থেকে না ভেঙে নীচ থেকে ভাঙা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।   


জমির মালিক গণেশ কেশরী বলেন, 'পুলিশ কোনও কথা শুনছে না। পুলিশ আমাদের খেদিয়ে দিচ্ছে। তাড়াচ্ছে। তাড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। তাড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। আত্মহত্যা করব। না পেলে আত্মহত্যা করব। প্রশাসন যদি না দেয়, আত্মহত্যা করব।' জমির মালিকের স্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশ কোনও কাগজ দেখায়নি, উল্টে চুপচাপ চলে যেতে বলেছে।


কদিন আগেই মাঝরাতে বিপর্যয় ঘটেছিল গার্ডেনরিচের পাহাড়পুরে। নির্মীয়মাণ অবৈধ বহুতল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় ১২ জনের। তারপরই এলাকায় অবৈধ নির্মাণের একের পর এক অভিযোগের পাশাপাশি সবার নজরে পড়ে পাহাড়পুর রোডের J474B ও J474C বহুতল দু'টি। একটি বহুতলের গায়ে হেলে পড়েছে আরেকটি। এবিপি আনন্দে সেই ছবি দেখে হইচই পড়ে যায়।


কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২৩-এ জুলাই-অগাস্টে। বাড়িটি শুধু বেআইনিভাবে তৈরিই হয়নি তলা থেকে ফ্ল্যাটের আয়তনও অবৈধভাবে বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। আট মাস পর, বৃহস্পতিবার সেই নির্দেশ কার্যকর করতে আসেন পুরকর্মীরা।  ওপরের তলায় বাসিন্দারা থাকলেও নীচের তলাগুলি ভাঙার কাজ শুরু হয়। পুলিশ ও পুরকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। পুলিশ ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীদের। জমির মালিকের অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন বলে তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।


আরও পড়ুন: ফের ইডি হেফাজতে কেজরিওয়াল! এবার কতদিন?