ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা: ৯ বছর আগে এই এপ্রিল মাসেই, রাজ্য-রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে সামনে এসেছিল সারদা (Sarada) চিটফান্ড (Chitfund) কেলেঙ্কারি (Scam)।  সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। ২০২২-এর ১৯ এপ্রিল যেন সেই ছবিই ফিরল কলকাতায় (Kolkata)। 


শহরে প্রতারণা


ফের চিটফান্ডের পর্দাফাঁস হল শহরে। প্রতারণার ফাঁদে কয়েক হাজার মানুষ। ফের কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ। মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে গ্রেফতার কিং পিন লিজা মুখোপাধ্যায়। বেনিয়াপুকুরের এক আমানতকারীর কথায়, আমরা এবার কী করব? লক্ষাধিক টাকা দিয়েছি। পুলিশ সূত্রের খবর, বছরখানেক আগে এন্টালির সুরেশ সরকার রোডে এই চিটফান্ড চক্রের সূত্রপাত।


পুলিশ সূত্রের দাবি, এন্টালির মতোই প্রতারণার জাল ছড়ানো হয় কড়েয়া ও বেনিয়াপুকুর থানা এলাকায়। অতীতে সারদা বা রোজভ্যালির ক্ষেত্রে যেভাবে লগ্নি করতে আহ্বান জানানো হত। ঠিক সেভাবেই এন্টালি, বেনিয়াপুকুর ও কড়েয়া থানা এলাকার কোথাও কনভেন্ট স্কুল, কোথাও স্পোকেন ইংলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কোথাও রেস্তোরাঁ, কোথাও গিফট শপ খুলে এলাকার বাসিন্দাদের আস্থা অর্জন করেন লিজা। 


আরও পড়ুন, মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল তৃণমূল কাউন্সিলরের? বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ


কী অভিযোগ? 


অভিযোগ, দ্বিগুণ রিটার্নের লোভ দেখিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সেফ দ্য বেয়ারফুট নামে এক সংস্থায় লগ্নি করতে বলেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, ৩টি থানা এলাকার কয়েক হাজার মানুষ সেই ফাঁদে পা দেন। কোটি কোটি বাজার থেকে তুলে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা।


সূত্রের খবর, ৩টি থানা এলাকায় ৩টি পৃথক অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর চিটফান্ডের জাল ছিড়তে SIT গঠন করে লালবাজার। শুরুতেই সংস্থার ৮ জন কর্মীকে গ্রেফতার করে SIT। এরপর মহারাষ্ট্রের নাসিকে সংস্থার ডিরেক্টর লিজা মুখোপাধ্যায়-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হচ্ছে কলকাতায়। এরই মধ্যে কড়েয়া থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার আদিলুর রহমান ও ফিরদৌস নিশাকে এদিন তোলা হয় আলিপুর আদালতে। ধৃতদের ২৭ এপ্রিল অবধি পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।


সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, "এসভিএফ নেটওয়ার্ক নাম দিয়ে ২০১৬ থেকে একটি সংস্থা কলকাতায় আড়াইশো কোটি টাকা তোলে! চিটফান্ডের আদলে টাকা তুলেছে, টাকা ডাবল করা, রেকারিং ইস্যু করে তোলা হয়।" 


সারদা-রোজভ্যালি কেলেঙ্কারির পরে চিটফান্ড রুখতে আইন প্রণয়ন করে রাজ্য সরকার। তারপরও কীভাবে এই ধরনের ভুঁইফোঁড় সংস্থা মাথা তুলছে? ফের কেন ক্ষতির মুখে পড়ছেন আমানতকারীরা? নানা মহলে উঠছে প্রশ্ন।