অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: কোথায় হবে মহম্মদ আলি পার্কের দুর্গাপুজো (Durga Puja)? এখনও রয়েছে গভীর সংশয়। পুরসভা পার্ক থেকে প্যান্ডেল সরাতে বলেছে। রবিবার সকালে পুলিশ গিয়ে বলে, প্যান্ডেলের কাজ বন্ধ রাখতে। এদিকে সমস্যা কাটাতে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা পুজো উদ্যোক্তাদের। সেই বৈঠকেই সমাধানসূত্রে বেরনোর আশা করছেন উদ্যোক্তারা। পুজোর জন্য বিকল্প প্রস্তাবও তৈরি করে রেখেছেন উদ্যোক্তারা।
কেন বারণ?
মহম্মদ আলি পার্কের (MD Ali Park) নীচে জলাধার রয়েছে। বহু পুরনোর সেই জলাধারের অবস্থা জরাজীর্ণ। তার ওপর প্যান্ডল হলে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেই আশঙ্কাতেই শনিবার মহম্মদ আলি পার্কের প্যান্ডেলের কাজ বন্ধ করার জন্য দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছে কলকাতা পুরসভা। রবিবার সেই প্যান্ডেলের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু, তা সরানোর কাজ শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে দুর্গাপুজো কমিটিগুলির। পুজোর উদ্যোক্তাদের আশা, ওই বৈঠক থেকে সমাধানসূত্র বেরোতে পারে।
পুরসভার আশঙ্কা:
যেখানে প্যান্ডেল হচ্ছে, তার নীচে রয়েছে পুরসভার জলের রিজার্ভার। রিজার্ভারের কাঠামো দুর্বল। তার ওপর পুজোর মণ্ডপ থাকবে। সেখানে দর্শকদের ভিড় হলে ভেঙে পড়তে পারে গোটা কাঠামো। সেক্ষেত্রে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পাশাপাশি ওই রিজার্ভারের কোনও ক্ষতি হলে মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
বিকল্প প্রস্তাব:
জোড়াসাঁকোর বিধায়ক জানিয়েছেন, বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হবে প্রশাসনকে। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, মণ্ডপ চত্বরে দর্শকদের উঠতে দেওয়া হবে না। মহম্মদ আলি পার্কের এই পুজোর উদ্যোক্তা ইউথ অ্যাসোসিয়েশন।
কতদূর এগিয়েছে কাজ?
বেশ অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্যান্ডেলের কাজ। থিম শিল্পী চিরঞ্জিত্ ঘোষ বলেন, 'কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তবে এই প্যান্ডেল অন্য জায়গায় সরানো যাবে না। আমাদের আর সাতদিনের কাজ বাকি।' ইউথ অ্যাসোসিয়েশন পুজো কমিটির এক্সিকিউটিভ সদস্য প্রভাতচন্দ্র তিওয়ারি বলেন, 'এটা তো শুরু হয়েছে অনেকদিন। খুঁটি পুজো হয়েছে। তখন বলেনি কেন? আমরা আজ নিজেরা বসব। সিএমের সঙ্গে বৈঠকে রয়েছে। দেখব, সমাধান কিছু হয়ে যায় কি না।' গত ৭ জুলাই খুঁটি পুজো হয়। তাতে অংশ নেন জোড়াসাঁকোর তৃণমূল বিধায়ক বিবেক গুপ্ত। জোড়াসাঁকোর তৃণমূল বিধায়ক বিবেক গুপ্ত বলেন, 'আমরা যখন খুঁটি পুজো করি, তখনও পুরসভার সঙ্গে কথা বলে করি। ফের পুরসভার সঙ্গে কথা বলব। যদি সেরকম পরিস্থিতি হয়, তাহলে দর্শক ওপরে উঠবে না। জলের ট্যাঙ্কের ওপরে করিনি। পাশে করেছি। এক্স চেয়ারম্যান এসব করে মায়ের পুজো আটকানোর চেষ্টা করছেন, ওরা পুজো বিরোধী।'
মহম্মদ আলি পার্ক পুজো কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্য়ান দীনেশ বাজাজ বলেন, '২০১৯ ও ২০২০তে- মহম্মদ আলি পার্কের পুজো হয়েছে পাশের দমকল কেন্দ্রে। ২০২১-এ পুজো হয়েছে পার্কের সামনের সিঁড়িতে।'
পুরসভার নোটিস পাওয়ার পর এখন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে উদ্যোক্তারা।