কলকাতা : বস্তার গায়ে লেখা MRP ১ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ, ৫০ কেজির সেই সারের (Fertilizer) বস্তা কিনতে হচ্ছে ২২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে। আলু (Potato) চাষের মরশুম শুরুর আগে জেলায় জেলায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। জোগান কম, তাই দাম বেশি- বলে সাফাই বিক্রেতাদের। এই পরিস্থিতিতে সার নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। 


বাজারে চাহিদা কম, কিন্তু হিমঘরে মজুত আলু। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে হিমঘর খালি করে না দিলে দিতে হবে বাড়তি টাকা। আলু নিয়ে কৃষকদের কপালে যখন চিন্তার ভাঁজ, তখন নতুন আলু চাষের মরশুম শুরুর আগে উদ্বেগ বাড়িয়েছে সারের সঙ্কট ও দাম। বুধবারই সারের সঙ্কট নিয়ে বিধানসভায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। 


জেলায় জেলায় চলছে ধান তোলার কাজ। শুরু হবে আলু, কপি সহ শীতের সবজি চাষ। এই সময় সার নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন কৃষকরা। সিঙ্গুরের চাষি পরেশ দাস জানান, সার পাওয়াই যাচ্ছে না। ২৪০০ টাকা ইফকোর দাম বলছে। 


বিপাকে চাষিরা-


এদিকে নবকুমার দাস নামে সিঙ্গুরের এক সার বিক্রেতা বলেন, সব সার পড়ে আছে। অথচ খদ্দের নেই। চাহিদার তুলনায় ১০-২৬-২৬-এর জোগান কম।


একই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরে। সারের দাম নিয়ে নাজেহাল ক্রেতা ও বিক্রেতারা। অভিযোগ, ১ হাজার ৪০০ টাকার সার কিনতে হচ্ছে ২২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা বস্তা।


মেদিনীপুরের বাগডুবি গ্রামের কৃষক স্বপন বেরা জানান, দোকান থেকে নিতে গেলে বলছে আধার কার্ড দেখাও। দেখে সার নিয়ে এসো। ২৪০০-২৫০০ টাকা নিচ্ছে। সারের জন্য আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে, কিন্তু, ধানটার দাম তো আসছে না।


সার নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে বাঁকুড়ায়। ওন্দার কৃষক জগদীশ পাল বলেন, সারের তো দুর্মূল্য। আমাদের চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। ২৩০০-২৪০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। 


পূর্ব বর্ধমানের কৃষকদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না ১০-২৬-২৬। মিললেও গুনতে হচ্ছে বেশি টাকা। খণ্ডঘোষের কৃষক অরবিন্দ পাল বলেন, সার নিয়ে চাষিদের নাজেহাল অবস্থা। সেই সার ১৬০০-১৭০০ টাকা দাম। কালোবাজারির কারণে সেটা ২১০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ২৫০০ টাকায় পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। তাও আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পাচ্ছে না।


রাজীব মণ্ডল নামে এক সার ব্যবসায়ী অবশ্য বলেন, সমস্ত প্রোডাক্ট দিয়েই আলু চাষ করা সম্ভব। হঠাৎ একটা অন্যরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।চাষিও সচেতন হচ্ছে। এক-দুবছর চললে চাষিদেরও কোনও সমস্যা হবে না।


পশ্চিম বর্ধমানের অন্যতম কৃষিপ্রধান ব্লক কাঁকসা। চাষিদের অভিযোগ, আলু ও সবজি চাষের জন্য যে সার দরকার তার জোগান নেই। এই প্রেক্ষিতে সারের সংকট নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা। কৃষকরা চান, বন্ধ হোক এই তরজা। দাম কমুক, জোগান বাড়ুক সারের।