কলকাতা: কিছুক্ষণের মধ্যেই সব শেষ। চোখের পলক ফেলতেই আগুন গ্রাসে গোটা ঘর, মাথার ছাদ। কোনওক্রমে ছেলেকে কোলে করে বেরিয়ে এসে মা দেখলেন লেলিহান শিখা গ্রাস করছে শেষ সম্বলকেও। আশেপাশে তখন হাহাকার-কান্নায়-সব কিছু হারানোর ব্যথা। 


রবিবারের সকালে আনন্দপুরে ফর্টিস হাসপাতালের কাছে ইএম বাইপাসের ধারে ঝুপড়িতে ভয়াবহ আগুনে চিত্রটা এমনটাই। এদিন সকালে একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে ৫০-টিরও বেশি ঝুপড়ি। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর লড়াই চালাচ্ছে। এদিন সকাল থেকেই হাওয়ার দাপট থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি, একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেরজেরে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দাউদাউ করে জ্বলে যায় একাধিক ঝুপড়ি। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয়রাও।


এলাকায় একাধিক হোটেল রয়েছে। রয়েছে বসতিও। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড থেকে শুরু করে ঝুপড়িবাসী বহু মানুষের যথাসর্বস্ব পুড়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অ্যাডমিট কার্ড থেকে শুরু করে টাকাপয়সা, সোনাদানা, শেষ সম্বলটুকু খুইয়ে এক লহমায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ঝুপড়িবাসীদের জীবন। 


কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু আগুনের গ্রাসে সব হারিয়েছে একাধিক পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়ে কেউ কেউ জানিয়েছেন, 'চোখের সামনে সব শেষ, কোথায় যাব এবার, মাথার ছাদ গেল, এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছি, কী খাব, কী করব, কিচ্ছু জানি না, সব শেষ হয়ে গেল'। 


আরও পড়ুন, বাইপাসের ধারে ঝুপড়িতে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে ছাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড, বইখাতা


দমকলের তরফে বলা হয়েছে, কীভাবে এই আগুন লেগেছে সেই কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ঝুপড়িগুলির মাথায় প্লাস্টিকের ছাউনি থাকায় এবং হাওয়ার দাপট, সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরবর্তীতে দমকল সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ৫০ এর বেশি বাড়ি এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 


কিন্তু যা গেছে, যা গেল, তা ফিরবে না। আগুনের ধোঁয়ায় যেন এক অন্ধকার অনিশ্চিত ভবিষ্যত। কী করবেন আগামী দিনে, প্রশাসনের তরফে কী সাহায্য করা হবে? সেই সব প্রশ্ন নিয়েই রাস্তাতে বসে ঝুপড়িবাসীরা।                  


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে