সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : ফের আদালতে ধাক্কা রাজ্যের। বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। খারিজ রাজ্য ও অন্যতম অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়েনের আবেদন।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
১১ বছর পর গত ৯ জুন তপন দত্ত খুনের মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য ও অন্যতম অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়েন। ২০১১ সালের ৬ মে, খুন হন বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত। ঘটনার ৭ দিনের মাথায় তদন্তভার নেয় CID। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। নিহত তপন দত্তের স্ত্রীর CBI তদন্তের দাবিতে মামলা কলকাতা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে, ফের কলকাতা হাইকোর্টে আসে। এই মামলায় এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, হাওড়া আদালত নয়, এরপর থেকে এই মামলার শুনানি হবে CBI’র বিশেষ আদালতে।
রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ
সেই দিন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা পর্যবেক্ষণে জানান, সিআইডি আসল অপরাধীদের ধরতে ব্যর্থ, তারা ওপর ওপর তদন্ত করেছে। তাই সাধারণ মানুষের আস্থা বজায় রাখতে তদন্তকারী সংস্থা বদলানো প্রয়োজন। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তদন্ত এবং বিচারপ্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন, যার ফলে মামলা ভুলপথে চালিত হয়। সিঙ্গল বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে এও জানায়, যাঁরা বিপুল অর্থ এবং রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন তাঁদের মাঝে তপন দত্ত হয়তো বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। এই ব্যক্তিরা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী এবং ভাল যোগাযোগ রয়েছে। একটা স্বচ্ছ এবং কার্যকরী তদন্ত হয়তো প্রকৃতপক্ষে একটা পোকাভর্তি পাত্রের মুখ খুলে দিতে পারে, অথবা কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির ভূমিকা প্রকাশ করতে পারে। তপন দত্ত হত্যা মামলায় পর্যবেক্ষণে জানায় সিঙ্গল বেঞ্চ।
গত মাসেই আদালতের নির্দেশের প্রায় তিন মাস পর আজ প্রথমবার বালিতে নিহত তৃণমূল নেতা তপন দত্তের বাড়িতে যায় CBI। এদিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন CBI’এর তদন্তকারী অফিসার। এর কয়েকদিন আগেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন প্রতিমা দত্ত। তবে সেদিন সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়ে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।