কলকাতা: ডেঙ্গি (Dengue) সচেতনতায় প্রচার ঘিরে কসবায় (Kasba) দু’পক্ষের সংঘর্ষ। থানার সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিপিকা মান্নার অনুগামীদের অভিযোগ, রবিবার বহিরাগতদের নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায় ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা।


কসবা থানায় (Kasba Police Station) অভিযোগও দায়ের হয়। কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় গতকাল কসবা থানার সামনে (Kasba Police Station)  অনুগামীদের নিয়ে ধর্নায় বসেন লিপিকা মান্না। সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা চলে আসায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায় বলে অভিযোগ। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা। এ নিয়ে দুই তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলরের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


উল্লেখ্য, রাজ্যের ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২৪ জন। এরই মাঝে রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে তথ্য গোপনের অভিযোগ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্যের একাধিক জেলায় ডেঙ্গির (Dengue) দাপট।


শেষ ২ সপ্তাহে ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত ২ হাজার ২৪০ জন। অভিযোগ, রাজ্য সরকার ৩১ মে পর্যন্ত ডেঙ্গি সংক্রান্ত যে রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ৩১ মে পর্যন্ত যতজন ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত ছিলেন, ৩১ অগাস্টেও সংখ্যাটা অপরিবর্তিত। রাজ্য সরকার ডেঙ্গির সঠিক তথ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে পাঠালে, এই মুহূর্তে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) স্থান এক নম্বরে।


পুজোর মুখে চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি: হাওড়ায় ইতিমধ্যে দুই আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। এবার ৯ নম্বর ওয়ার্ডেও মিলল ডেঙ্গির লার্ভা। মানুষকে সচেতন করতে প্রচারে নামলেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান। এদিকে, ফের শহরে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। হরিদেবপুরের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যু হল ডেঙ্গিতে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ। গাইডলাইন মেনে চিকিত্‍সা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। 


আরও পড়ুন: Kunal Ghosh: 'অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস হল না কেন ?', কুণালের নিশানায় শুভেন্দু 


কলকাতা ও জেলাজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা: ইতিমধ্যেই কলকাতা ও হাওড়ায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। রবিবার, স্বাস্থ্যভবন সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে,রাজ্যে বর্তমানে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২৯২ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৫১ জন রোগী। রবিবার, নতুন করে ৯১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। যে সব জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি তার মধ্যে রয়েছে,  তাদের মধ্যে রয়েছে, জলপাইগুড়ির ১৬ জন বাসিন্দা। মুর্শিদাবাদের ১৬ জন। ১৫ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। ১২ জন হুগলি ও ৯ জন হাওড়ার বাসিন্দা। 


কলকাতার পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। হাসপাতাল থেকে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ল্যাবে বাড়ছে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে রোগীদের ভিড়। কালীঘাটে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখা গেল রোগীদের লম্বা লাইন। ২৪ নম্বর হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিট। এখানকার বাসিন্দা প্রিয়া ঠাকুরের ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে ২৬ অগাস্ট। একইরকম উপসর্গে ভুগছেন, ৪০ নম্বর কালীঘাট রোডের বাসিন্দা আশিস সিং। 
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গির আদর্শ চিকিৎসা বিধি সম্পর্কে সরকারি চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল করা হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে প্লেটলেট মজুত রাখার বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।