হিন্দোল দে, কলকাতা: সোনারপুরের খেয়াদার পর, এবার লেদার কমপ্লেক্স থানার তারদা গ্রাম পঞ্চায়েত। কার্যত পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায়, চুরি হয়ে যাচ্ছে সিলভার স্যান্ড বা সাদা বালি (Illegal Sand Mining)। এবিপি আনন্দর ক্যামেরা দেখেই কেউ কেউ পড়িমরি করে ছুটে পালাতে দেখা গেল অভিযুক্তদের। বেআইনি বালি খাদানের মালিক গিয়ে লুকোলেন ঝোপ-জঙ্গলে (Bantala News)।


দিনে দুপুরে, একেবারে প্রকাশ্যে, কার্যত পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায়, চুরি হয়ে যাচ্ছে সিলভার স্যান্ড বা সাদা বালি (South 24 Parganas News)। কিছুদিন আগে আমরা দেখিয়েছিলাম, কলকাতার একেবারে নাকের ডগায় সোনারপুরের খেয়াদায় কীভাবে অবৈধ বালি খাদান গজিয়ে উঠেছে (Kolkata News)।

তখন এবিপি আনন্দর খবরের জেরে সক্রিয় হয় পুলিশ-প্রশাসন। বন্ধ হয় বেআইনি কারবার। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই এবার খেয়াদার পাশে, কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত লেদার কমপ্লেক্স থানার তারদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চুরি হয়ে যাচ্ছে সাদা বালি এবং মাটি।


ভারী ভারী যন্ত্র দিয়ে, মাটি কেটে সতূপ করে রাখা হচ্ছে বালি। পরে, লরি করে তা পাচার হচ্ছে শহর এবং শহরতলিতে। আমাদের ক্যামেরা দেখেই পড়ি-কি মরি করে দৌড়তে শুরু করলেন অবৈধ বালি খাদানের কর্মীরা। কেউ আল টপকে, কেউ আবার, কাদা-মাটি পেরিয়ে পালালেন।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'পুরসভায় ঢুকে গিয়েছে সিবিআই, এবার কি বাথরুমেও ঢুকবে?' প্রশ্ন মমতার

কালো টি-সার্ট পড়া এক যুবককে মেশিন দিয়ে বালি কাটতে দেখা যায়। এবিপি আনন্দের ক্যামেরা দেখে এমন ভান করলেন, যেন আলের ধারে বসে, মোবাইলে গেম খেলছেন। আর কর্মীরা যখন পালাচ্ছেন, তখন বেআইনি বালি খাদানের মালিকও দিলেন দৌড়। শেষ পর্যন্ত গিয়ে লুকোলেন ঝোপ-জঙ্গলে।


তারদা গ্রামে এই বালি চুরি নিয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি-র এক স্থানীয় কর্মী বলেন, "এখানে তো সব তৃণমূলের লোক জড়িত। ভয়ে লোক কিছু বলতে পারে না। পুলিশ সব জানে। ওদের কাছে হয়ত ভাগ পৌঁছয়।" এই ঘটনায় সিপিএম-এর কেন্দ্রীয়  কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আপনাদের খবরে বারুইপুরের গন্ধ রয়েছে। পুলিশ যখন ভাগ-বাঁটোয়ারা করে। সবই চোরে চোরে ভর্তি।"
বাইট- সুজন চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সিপিএম

যদিও, এতকিছুর পরও, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বলছেন তারদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও অবৈধ বালি খাদান নেই। ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার দাবি, "তারদায় কোনও অবৈধ বালির খাদান নেই। হলেও মাটি কাট হয়ে থাকতে পারে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সবটাই মিথ্য়ে। বিজেপি-র লোক এসব বলে।"


যদিও ভাঙড় এক নম্বর ব্লকের বিডিও দীপ্যমান মজুমদার পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, "এ বিষয়েও আগেও পদক্ষেপ করা হয়। বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর রয়েছে। বেশ কিছু গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়। আবার নতুন করে শুরু হল কীভাবে, দেখতে হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব। সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে।"

এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের ইস্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার আরিশ বিলাল জানিয়েছেন, এই বিষয়ে কিছু জানা নেই। যদি বেআইনি বালিখাদান থাকে, তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।