সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ইএনটি চিকিৎসায় (ENT Treatment) নতুন দিশা। কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজের (Calcutta Medical College) প্রফেসর ও ENT সার্জেন সুদীপ দাস তৈরি করেছেন বিশেষ এক যন্ত্র। তাঁর দাবি, এই যন্ত্রের সাহায্য়ে কোনওরকম ঝুঁকি ছাড়াই শ্বাসনালী বা খাদ্যনালী (Oesophagus) থেকে বের করে আনা যাবে মার্বেলের মতো মসৃণ জিনিস। ইতিমধ্য়েই মিলেছে পেটেন্ট। 


নতুন আবিষ্কার, মিলল পেটেন্টও


ENT অস্ত্রোপচারে নতুন যন্ত্রের আবিষ্কার। পেটেন্ট পেলেন কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজের প্রফেসর ও ENT সার্জেন সুদীপ দাস। নাম স্মুথ ফরেন বডি পুলার (smooth foreign body puller)। চিকিৎসকের দাবি, এই যন্ত্রের সাহায্য়ে কোনওরকম ঝুঁকি ছাড়াই শ্বাসনালী বা খাদ্যনালী থেকে বের করে আনা যাবে মার্বেলের মতো মসৃণ জিনিসও। 


কোন কোন কাজে লাগবে ?


খেলতে খেলতে কখনও খেলনার টুকরো, পেরেক, মার্বেল, ফলের বীজ জাতীয় জিনিস নাকে ঢুকিয়ে ফেলা বা গিলে ফেলা শিশুদের ক্ষেত্রে নতুন ঘটনা নয়। সাধারণত, এক্ষেত্রে, চিকিৎসকরা এন্ডোস্কোপিক পদ্ধতিতে শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর ভিতর থেকে কোনও জিনিস চিমটের মতো যন্ত্রের সাহায্য়ে তুলে আনেন। কিন্তু, যদি এমন কিছু শ্বাস বা খাদ্যনালিতে চলে যায়, যার গা মসৃণ, সেখানেই সমস্যা তৈরি হয়। মার্বেল, ফলের বীজ জাতীয় কিছুকে চিমটের মতো যন্ত্রের সাহায্য়ে তুলতে গেলে, বারবার তা পিছলে যায়।অগত্যা তখন ঠেলে খাদ্যনালীতে পাঠানো ছাড়া উপায় থাকে না। কিন্তু, তা যদি খাদ্যনালীর কোথাও আটকে থেকে যায়, অস্ত্রপ্রচার ছাড়া উপায় থাকে না। এই যন্ত্রের সাহায্যে ঝুঁকি এড়ানো যাবে বলেই দাবি চিকিৎসকের।


সফল প্রয়োগ, কীভাবে এল ভাবনা ?


১৪টি শিশুর উপর এই যন্ত্রের সফল প্রয়োগের পর, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন কলকাতা মেডিক্য়ালের চিকিৎসক সুদীপ দাস। ৩১ জানুয়ারি পেটেন্ট পেয়েছেন তিনি। কিন্তু, এই যন্ত্র তৈরির ভাবনা কীভাবে মাথায় এল? চিকিৎসক ফিরে গেছেন ১৬ বছর আগের এক ঘটনায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেছেন, '২০০৭, তখন এসএসকেএমে, অল্পদিনের ব্যবধানে ২ বাচ্চা মার্বেল গিলে ফেলে। খাদ্যনালীর ভিতরে দেখা গেলেও বের করতে পারেননি। যতবার চিমটের সাহায্য়ে তুলতে গেছেন ভিতরে ঢুকে গেছে। তখনই ভাবনা এমন কিছু তৈরি করতে হবে, যা মার্বেলের মতো মসৃণ জিনিসকেও বের করতে পারবে।'


এরপরই ভাবনা-চিন্তা শুরু। প্রথমদিকে মনোমত হয়নি। শেষমেশ, ২০১১ সালে কলেজস্ট্রিটের এক চিকিৎসা সামগ্রী নির্মাণকারী সংস্থা তাঁর কথা মতো বানিয়ে দেয় ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এই স্মুথ ফরেন বডি পুলার। অন্যান্য ENT চিকিৎসকরাও যাতে এই যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন, স্বাস্থ্য দফতরের কাছে প্রস্তাব দেবেন বলে ঠিক করেছেন চিকিৎসক সুদীপ দাস। 


আরও পড়ুন- বিদ্যুতের বিল বাকি থাকার মেসেজে ফাঁদ! কলকাতার চিকিৎসক খোয়ালেন প্রায় ৫ লক্ষ