অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: দরজা খোলা, আর সেই অবস্থাতেই ছুটে চলেছে মেট্রো। যাত্রীদের নিয়ে কুঁদঘাট থেকে কালীঘাট দরজা খোলা রেখেই চলল মেট্রো চলল মেট্রো। বুধবার সকাল ৯.৩৯টা নাগাদ মেট্রোয় বিভ্রাটে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। কী কারণে এমন ঘটনা, চলন্ত অবস্থায় রেকের খোলা দরজা প্রসঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছিল, দুর্ঘটনা এড়াতে মোতায়েন ছিল আরপিএফ।’








কিছুদিন আগেই যাত্রী সুবিদার্থে পুরনো সমস্ত রেক বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে। তারপরেও নতুন রেকে কেন এমন যান্ত্রিক ত্রুটি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর আগেও অফিসটাইমে একাধিকবার সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা।


যান্ত্রিক ত্রুটি: সম্প্রতি যান্ত্রিক ত্রুটির (Technical Error) কারণে রেক বিকল হয়ে মেট্রো পরিষেবায় (Kolkata Metro Service) বিঘ্ন। এদিন বেলা ১২টা ১৮ নাগাদ নিউ গড়িয়াগামী একটি রেক বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে যায় শোভাবাজার স্টেশনে (Sovabazar Metro Station)। এর জেরে ওই লাইনে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো চলাচল। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, সমস্য়ার কারণে সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে নিউ গড়িয়া (New Garia) মেট্রো চলাচল করছিল। এর জেরে ট্রেনের মধ্যে আটকে পড়েন অসংখ্যা যাত্রী। যদিও তড়িঘড়ি তা সারানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর ফের মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক হয় এ দিন।


এ দিন যান্ত্রিক ত্রুটিতে মেট্রো বিভ্রাট হয়। আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শোভাবাজার স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে কবি সুভাষগামী মেট্রো। চরম হয়রানির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা। আপাতত পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষে। 


লাইনে ফাটল: কিছুদিন আগেই কার্যত সাত সকালে কলকাতা মেট্রোয় (Kolkata Metro) সমস্যার সৃষ্টি হয়। গিরিশ পার্ক (Girish Park) স্টেশনের কাছে মেট্রোর লাইনে দেখা গেল ফাটল দেখা দেয়। দমদম থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত আপ ও ডাউন দুই লাইনেই বন্ধ করা হয় মেট্রো চলাচল। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে লাইন পরীক্ষার কাজ। কিন্তু কেন লাইনে ফাটল? প্রাথমিক তদন্তের পর মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দাবি করা হয়, তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য লাইনে সমস্যা হচ্ছে। অফিস টাইমে এমন ভোগান্তির শিকার হন মেট্রো যাত্রীরা। এদিন মোটরম্যান যখন গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে পৌঁছন তখনই রেললাইনে ফাটল দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা শুরু হয়। 


মেট্রোয় ‘ক্ষয় রোগ’: ক্ষতিগ্রস্ত টালিগঞ্জ থেকে নিউ গড়িয়া মেট্রো লাইন। একাধিক জায়গায় ক্ষয় ধরেছে ট্র্যাকে। সমস্যা মেটাতে কাজ শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগে। রেল গ্রাইন্ডিং মেশিন এনে চলছিল লাইন সারানোর কাজ। টালিগঞ্জ থেকে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত কমানো হয় রেলের গতি। ৫৫ কিমি’র বদলে মেট্রো চলছিল ৩০ কিমি গতিতে। দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বরে রয়েছে একাধিক বাঁক। বিপদ এড়াতে সেখানেও কমানো হয় গতি।


মাত্র ১৫ কিমি গতিতে চলছে মেট্রো। লাইনের ক্ষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোর রেকও। চারটি মেট্রো রেকের চাকায় ক্ষয় ধরা পড়েছে ইতিমধ্যেই। লাইনে কেন ‘ক্ষয় রোগ’, জানতে বিশেষ পরীক্ষা করানো হচ্ছে মেট্রোর তরফে। দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ ৩২ কিমি পথ। তার মধ্যে ৩০% অংশে মেট্রোয় তীক্ষ্ণ বাঁক। ৪ শতাংশ ক্যানালের ওপর দিয়ে মেট্রো লাইন। ফলে লাইনে ত্রুটি স্বাভাবিকভাবেই  চিন্তায় পড়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।