কলকাতা: বালিগঞ্জের (Bullygange) পর এবার ফের বান্ডিল বান্ডিল নোটের হদিশ মিলেছে গড়িয়াহাটে (Gariahat)। কলকাতা পুলিশের এসটিএফের অভিযানে কোটির বেশি নগদ টাকার হদিশ মিলেছে। গড়িয়াহাট থানায় টাকার কাউন্টিং করা হয়।

  
গাড়িতে বান্ডিল বান্ডিল নোট নিয়ে যাওয়ার সময় ৩জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে বলে শেষ অবধি পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে।  যদিও কোথায়, কার কাছে যাচ্ছিল বান্ডিল বান্ডিল নোট? এখনও রহস্য। এই ঘটনায়, যমুনালাল বাজাজ স্ট্রিটের বাসিন্দা মুকেশ সারস্বত, বেলগাছিয়ার দুলাল মণ্ডলকে আটক (Detain) করা হয়েছে।


প্রসঙ্গত, রাজ্যে ইতিমধ্যেই একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সারা বাংলা দেখেছে টাকার মেশিন বয়ে এনে টাকা গুনতে গুনতে রাত পার হওয়ার ঘটনাও। নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় এভাবেই রাজ্যে অভিযান চালাতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার ঘটনা দেখেছে রাজ্য। পাশাপাশি ব্যবসায়ীর বাড়ির খাটের তলা থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনাও এভাবেই প্রকাশ্যে এসেছে। একদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ তো রয়েছেই। সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত কাজ করছে নিয়োগ দুর্নীতি, গরুপাচার মামলা এবং কয়লাপাচার মামলা।  আর এবার ইডির অভিযানে সদ্য বালিগঞ্জেও কোটি কোটি টাকার উদ্ধার হয়েছে। আর তার ৪৮ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই ফের গড়িয়াহাটে টাকা বান্ডিল বান্ডিল টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।   


হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে, পতাকা ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের হেড অফিস-সহ ৮টি জায়গায় আয়কর দফতরের তল্লাশি চালানোর দিনেই, বালিগঞ্জের নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের অফিস থেকে কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচারের পর, এবার কয়লাকাণ্ডে মিলল কোটি টাকার হদিশ। উদ্ধার হওয়া টাকার বান্ডিলে সবই ৫০০-র নোট পাওয়া গিয়েছে। কোথা থেকে এল এত টাকা ? কেন বান্ডিল বান্ডিল টাকা রাখা হয়েছিল ? নেপথ্যে কারণ কী ? ইডি সূত্রে দাবি, মূলত বুধবার সকাল থেকেই, বালিগঞ্জের গড়চায় নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টর বিক্রম শিকারিয়ার অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। এখানেই রয়েছে, গজরাজ গ্রুপের একাধিক কোম্পানির অফিস।


সূত্রের দাবি, তল্লাশিতে দেড় কোটির কাছাকাছি টাকা উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের আরও দাবি, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হয়। বয়ান নেওয়া হয় সাক্ষীদের। সেই সূত্রেই জানা যায়, আসানসোল এবং পুরুলিয়া থেকে কয়লা পাচারকারীদের টাকা হাত বদল হয়ে এই নির্মাণকারী সংস্থার মাধ্যমে বাজারে খাটানোর চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই তথ্য পাওয়ার পরই, দিল্লি থেকে কলকাতায় আসেন ইডির কয়েকজন অফিসার। কলকাতার ইডির জোন-টুর অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে এদিন সকালে গজরাজ গ্রুপের এই অফিসে তাঁরা পৌঁছে যান।  সূত্রের দাবি, বিক্রম শিকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, মিস্টার গ্রেওয়াল বলে একজনের নাম উঠে আসছে।


আরও পড়ুন, 'পার্থর মতো মনজিতের বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেবেন মুখ্যমন্ত্রী?', বিস্ফোরক শুভেন্দু-সুকান্ত


 ইডি সূত্রে দাবি, শরৎ বোস রোডের একটি ধাবার সূত্রে মিস্টার গ্রেওয়ালের কাছে টাকা আসে। পরে, সেই টাকা এসে পৌঁছয় বালিগঞ্জের গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টরের হাতে। সংস্থার অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে, কোনও প্রভাবশালীর টাকা খাটানো হত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত যা জানা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট, বিক্রম শিকারিয়া রিয়েল এস্টেট, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সহ প্রায় ৩০টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। তিনি কোনও সংস্থার ডিরেক্টর, আবার কোনও সংস্থার অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। ২০০৫ সালে, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট ব্যবসা দিয়ে তাঁর হাতেখড়ি হয়। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর রিয়েল এস্টেটের প্রোজেক্ট।