কলকাতা: বালিগঞ্জে প্রায় দেড় কোটির হদিশকাণ্ডে বিস্ফোরক টুইট শুভেন্দু ও সুকান্তর। মূলত বালিগঞ্জে নির্মাণকারী সংস্থার অফিসে ইতিমধ্য়েই প্রায় দেড় কোটির হদিশ মিলেছে। তবে ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। টুইটে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি দিয়ে ট্যুইটে অভিযোগ করেন, 'বাড়ির মালিক মনজিৎ সিংহ গ্রেওয়াল তৃণমূলের হিন্দি সেলের সভাপতি। বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলে বলেন, মাননীয়া কি হিন্দি শেখার জন্য তাঁকে নিযুক্ত করেছেন?'। পাশাপাশি, টুইটে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইয়ের ছবি পোস্ট করে আক্রমণ করেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা প্রশ্ন তোলেন, 'পার্থর মতো মনজিতের বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেবেন মুখ্যমন্ত্রী?'।










হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে, পতাকা ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের হেড অফিস-সহ ৮টি জায়গায় আয়কর দফতরের তল্লাশি চালানোর দিনেই, বালিগঞ্জের নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের অফিস থেকে কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচারের পর, এবার কয়লাকাণ্ডে মিলল কোটি টাকার হদিশ। উদ্ধার হওয়া টাকার বান্ডিলে সবই ৫০০-র নোট পাওয়া গিয়েছে। কোথা থেকে এল এত টাকা ? কেন বান্ডিল বান্ডিল টাকা রাখা হয়েছিল ? নেপথ্যে কারণ কী ? ইডি সূত্রে দাবি, মূলত বুধবার সকাল থেকেই, বালিগঞ্জের গড়চায় নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টর বিক্রম শিকারিয়ার অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। এখানেই রয়েছে, গজরাজ গ্রুপের একাধিক কোম্পানির অফিস।


সূত্রের দাবি, তল্লাশিতে দেড় কোটির কাছাকাছি টাকা উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের আরও দাবি, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হয়। বয়ান নেওয়া হয় সাক্ষীদের। সেই সূত্রেই জানা যায়, আসানসোল এবং পুরুলিয়া থেকে কয়লা পাচারকারীদের টাকা হাত বদল হয়ে এই নির্মাণকারী সংস্থার মাধ্যমে বাজারে খাটানোর চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই তথ্য পাওয়ার পরই, দিল্লি থেকে কলকাতায় আসেন ইডির কয়েকজন অফিসার। কলকাতার ইডির জোন-টুর অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে এদিন সকালে গজরাজ গ্রুপের এই অফিসে তাঁরা পৌঁছে যান।  সূত্রের দাবি, বিক্রম শিকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, মিস্টার গ্রেওয়াল বলে একজনের নাম উঠে আসছে।


আরও পড়ুন, নবম-দশমের পর এবার গ্রুপ ডি, চাকরি হারাতে চলেছেন প্রায় ৩ হাজার


ইডি সূত্রে দাবি, শরৎ বোস রোডের একটি ধাবার সূত্রে মিস্টার গ্রেওয়ালের কাছে টাকা আসে। পরে, সেই টাকা এসে পৌঁছয় বালিগঞ্জের গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টরের হাতে। সংস্থার অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে, কোনও প্রভাবশালীর টাকা খাটানো হত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত যা জানা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট, বিক্রম শিকারিয়া রিয়েল এস্টেট, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সহ প্রায় ৩০টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। তিনি কোনও সংস্থার ডিরেক্টর, আবার কোনও সংস্থার অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। ২০০৫ সালে, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট ব্যবসা দিয়ে তাঁর হাতেখড়ি হয়। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর রিয়েল এস্টেটের প্রোজেক্ট। এর আগে নিয়োদ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ৫০ কোটি! তার পর গার্ডেনরিচেও ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধার হয়। এতেই থামেনি নগদ উদ্ধারের ঘটনা। এবার ফের কলকাতার বুকেই, ইডি তল্লাশিতে মিলেছে টাকার পাহাড়।