পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: বাগুইআটি জোড়া খুনের ( Baguiati Double Murder Case)ঘটনায় হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। বাগুইআটি জোড়া খুনের দু’ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও তাঁকে নাগালে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে এদিন গ্রেফতার হতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহত-র মা। বুজে আসা গলায় বললেন, অভিযুক্তের ফাঁসি চাই।
মূল অভিযুক্ত হতেই কী বললেন অতনু-র মা ?
এদিন নিহত অতনু-র মা বলেন, ওর ফাঁসি চাই।আমার অতনুকে ও ওই ভাবে মেরেছে।আমার অতনু কী দোষ করেছিল ও আমার অতনুকে, আমার বড় আদরের ছেলে, আমার একমাত্র ছেলে, বড় আদরের ও আমার বলতে বলতে ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী কে ? চিনতেন কিনা ? প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ও তো এই পাড়ারই ছেলে। এই পাড়াতেই শ্বশুর বাড়ি। এখানেই ওরা থাকে। ওর থেকে বাইকের জন্য টাকা নিয়েছে, ওর বন্ধুদের থেকে আমি শুনেছি পরে। ও আমাকে বলেনি , ওর বন্ধুরা বলেছে। ওর বন্ধুরা থানাতেও বলেছে এসব কথা। আর তারপরে আমার ছেলেকে এই অবস্থা করে দিয়েছে। ওর ফাঁসি চাই।'যদিও বাগুইআটি জোড়া খুনে যে টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছিল, তা জানাতেন না বলেই জানিয়েছেন অতনু-র বাবা। তাঁর কথায়,' এসব বলেওনি ও। শুধু বাইকের কথা বলেছিল। আমি বলেছিলাম, আমার তো নিজের বাইক আছে। তুই ওটা চালাবি।'
বাগুইআটিকাণ্ডে তদন্তে বড় সাফল্য পুলিশের
উল্লেখ্য, বাগুইআটি জোড়া খুনের দু’ সপ্তাহ পরেও গতকাল অবধি অধরা ছিল মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। জানা গিয়েছিল, পরপর মেসেজ করেছে, তা সত্ত্বেও লোকেশন ট্র্যাক করা যায়নি। কারণ বারাবার সিম বদল করায়, লোকেশন ধরা যাচ্ছিল না বলেই দাবি করেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। বাগুইআটিকাণ্ডে তদন্তে নামে সিআইডি-র হোমিসাইড শাখা। সঙ্গে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের অফিসাররা। নেতৃত্বে আইজি পদমর্যাদার অফিসার। অবশেষে মিলল বড় সাফল্য।হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে। বিধাননগর কমিশনারেটের হাতে ধরা পড়ে সে। সূত্রের খবর, ট্রেন ধরে ভিনরাজ্যে পালানোর পরিকল্পনা ছিল সত্যেন্দ্রর । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয় পুলিশের স্পেশাল টিম। স্টেশনে পা দেওয়ামাত্র সত্যেন্দ্রকে পাকড়াও করে পুলিশ।
আরও পড়ুন, বাগুইআটি জোড়া খুনকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী গ্রেফতার
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই দায়িত্বে নতুন আইসি
উল্লেখ্য, ২৫ অগাস্ট হাড়োয়ায় অভিষেকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তারপরে সেই দেহ উদ্ধারের কথা জানিয়ে থানায় থানায় বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু তার আগে, ২৩ অগাস্ট ন্যাজাটে অতনুর দেহ উদ্ধার হয়। সেই সময় অতনুর পচাগলা দেহ উদ্ধার হলেও কেন চুপ করে ছিল বসিরহাট থানা? কেন সেই কথা জানাল না বসিরহাট থানা? উঠছে সেই প্রশ্ন। পাশাপাশি অভিষেকের দেহ উদ্ধার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হাড়োয়ায় ইট বাঁধা অবস্থায় অভিষেকের দেহ উদ্ধার হয়, সেখানে দেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে দেখা যায় প্যান্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সেই প্যান্টে ইঁট বেঁধে রাখা হয়েছিল। যাতে জলের তলায় যাতে ডুবে থাকে দেহ।এভাবে দেহ দেখেও কেন খুন বলে সন্দেহ হয়নি পুলিশের, প্রশ্ন ওঠে। এরপরেই বাগুইআটিকাণ্ডে আইসি কল্লোল ঘোষ ও তদন্তকারী অফিসার এসআই প্রীতম সিংকে সাসপেন্ড করার পর বাগুইআটি থানার নতুন আইসি করা হয় শান্তনু সরকারকে।