কলকাতা: এসএসসি-র গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Group C RecruitmentScam) সিবিআইকে (CBI) জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিল আদালত (Court)। এবার মিডলম্যান প্রদীপ-প্রসন্নকে (Middleman Pradip Prassana) জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিল কোর্ট। মূলত, সিবিআই দাবি জানিয়েছে, বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ৩৫০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মিলেছে তথ্য। আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন প্রদীপ-প্রসন্ন, এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।


উল্লেখ্য, নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি গ্রেফতার হন প্রদীপ সিংহ।  আর তাকে গ্রেফতার করার পরেই তার সল্টলেকের  অফিসে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা চলে টানা তল্লাশী। জিডি ব্লকের ২৫৩ নং বাড়ি যান তদন্তকারী আধিকারিকরা। তদন্ত সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ওই অফিসে আসতেন প্রদীপ সিংহ (Pradip Sinha) । সিবিআই সূত্রে খবর, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে চাকরি পাইয়েও দিয়েছিলেন।  আরও কারা এখানে জড়িত রয়েছে, কীভাবে এই নিয়োগ দুর্নীতি প্রশ্ন উঠেছে। সিবিআই-র আইনজীবী বলেন, প্রদীপ মিডলম্যান হিসাবে কাজ করতেন।অযোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসএসসি-র নিয়োগ কর্তাদের সঙ্গে যোগযোগা করতেন প্রদীপ। অনেকগুলি ইমেল আইডি পাওয়া গিয়েছে, যেখানে অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। কার কথায় তালিকা তৈরি করা হত ? কে নির্দেশ দিতেন ? আর কারা কারা যুক্ত রয়েছেন ? তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।


ধৃত মিডলম্যান প্রদীপ সিং-কে (Pradip Singh) জেরা করেই মূলত খোঁজ মেলে প্রসন্নর।সূত্রের খবর, প্রদীপের মুখোমুখি প্রসন্নকে বসিয়ে করা হতে পারে জেরা। প্রদীপের সঙ্গে কথা হয়েছে, এরকম ৫ টি ফোন নাম্বার পাওয়া গিয়েছে। সিবিআই-র আইনজীবী আরও বলেন, নাকতলায় পার্থ-র বাড়ির কাছে একটি কম্পিউটার সেট আপ ছিল। সেটা প্রদীপ চালাতেন। সেখান থেকে প্রচুর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। যেমন ইমেল আইডি, যোগ্য নয় এমন প্রার্থীদের নামের তালিকা ও ফোন নাম্বার। singh1988pradip@gmail.com এই ইমেল থেকেই সবথেকে বেশি নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। প্রদীপ সিং এই ষড়যন্ত্রের একটা অংশ। ধৃত শান্তিপ্রদসাদের ফোনে প্রদীপ সিং-র নাম ছোটু বলে সেভ করা ছিল। প্রদীপের ডাক নাম ছোটু। দুজনের কখোপকথনও হোয়াটসআপে পাওয়া গিয়েছে।


অপরদিকে, গতবছরের শেষে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র  চার্জশিটে উঠে আসে আরও একাধিক বিস্ফোরক তথ্য । 'বেসরকারি বিএড, ডিএলএড ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজকে এনওসি (NOC) দিতে টাকা নিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কলেজ প্রতি ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।' এমনই দাবি করেছে ইডি। ইডি চার্জশিটে আরও দাবি করেছে, 'প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) পেতেন ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে। তাপস মণ্ডলই প্রাথমিকভাবে ফান্ড সংগ্রহ করতেন। পরে সেই ফান্ডের টাকা পাঠানো হত মানিক ভট্টাচার্যের কাছে। মানিকের মাধ্যমে সেই টাকা আবার পৌঁছে যেত উপরমহলে। অফলাইনে রেজিস্ট্রেশনের নামে মোট ২০ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে।'


আরও পড়ুন, 'আদালতে এসে ইয়ার্কি হচ্ছে?', গাজিয়াবাদে উদ্ধার হওয়া OMR শিট প্রকাশের নির্দেশ বিচারপতির


'মানিক ঘনিষ্ঠ সঞ্চিতা ভট্টাচার্য এবং হীরালাল ভট্টাচার্যের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা জমা পড়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য, ছেলে সৌভিকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে। শেষমেশ সব টাকা জমা পড়েছে শতরূপা ভট্টাচার্য ও মানিক ঘনিষ্ঠ পান্নালাল ভট্টাচার্যর অ্যাকাউন্টে। যাদবপুর, গড়িয়া ও নদিয়ার কালীগঞ্জে মানিক ভট্টাচার্যর ৬টি স্থাবর সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।' চার্জশিটে এমনই উল্লেখ করেছে ইডি।আরও বলা হয়েছে, 'নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাত ও স্বজনপোষণ লক্ষ্য করা গেছে। সন্দেহজনকভাবে তৈরি হয়েছিল অতিরিক্ত প্যানেল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যোগ্য প্রার্থীরা, লাভবান হয়েছেন অযোগ্যরা। শুধু সাদা খাতা জমা দিয়েই অনেকে চাকরি পেয়ে গেছেন', বলে দাবি জানিয়েছিল ইডি।