কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে গুজরাতের (Gujarat Assembly Elections 2022) দুই জেলায় বসবাসকারী বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম মানুষজনকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র (Citizenship)। তার রেশ এসে পৌঁছেছে বাংলাতেও। এ রাজ্যেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হয়ে গেল বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে নাগরিকত্ব ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ঠিক তারপর পরই রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।


নাগরিকত্ব ইস্যুতে সরব মমতা, কী বললেন দিলীপ ?


প্রসঙ্গত, ভোটমুখী গুজরাতে পড়শি দেশের সংখ্য়ালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে বড়সড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। গুজরাতে আগত পাকিস্তান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত। আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ারও সিদ্ধান্ত। ৩ দেশ থেকে আসা হিন্দু-শিখ-বৌদ্ধ-জৈন-পারসি-খ্রিষ্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত। ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে এদেশে অন্তত ৫ বছর বসবাসের সময়সীমা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গুজরাতের জেলা আধিকারিকদের নাগরিকত্বের শংসাপত্র দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতেও তাই চলে এসেছে সিএএ (CAA)। যা নিয়ে বুধবার মুখ খোলেন মমতা। তাঁর সাফ বক্তব্য,'এই সব রাজনীতি বন্ধ করো। গুজরাতে নির্বাচন আসছে বলে এসব করছে। আমরা এসব করতে দেব না। আমরা সবাই নাগরিক, এটাই আমার থিওরি। আপনি সব জানেন, আমিও সব জানি। দেশবাসীও সব জানেন।' আর এবার দিলীপ ঘোষ বলেন, 'সিএএ চালু হবে, ওঁর চোখের সামনেই হবে।'


 নাগরিকত্ব আইনে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়টা কী ?


 গুরারাত বিধানসভা নির্বাচন এমনিতেও উদ্বেগে রেখেছিল বিজেপি-কে। মোরবির সেতু বিপর্যয় সম্প্রতি তাতে অন্য মাত্রা যোগ করে। এর পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে রাজ্যের দুই জেলায় বসবাসকারী অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী যাঁরা মেহসানা এবং আনন্দ জেলায় দীর্ঘদিন বাস করছেন, তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে তৈরি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে নয়, ১৯৫৫ সালের পুরনো নাগরিকত্ব আইনের আওতায় এই নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সিএএ তৈরি হলেও, তার বিধি-নিয়ম এখনও ঠিক করা হয়নি। ফলে কার্যকর করা যায়নি সংশোধিত আইন।


আরও পড়ুন, ঘর নিয়ে 'দুশ্চিন্তায় মোদি', বাইরে ফুট কাটলেন শান্তনু-সুজনরা


বাংলায় সিএএ চালুর জল্পনা উস্কে দেন শুভেন্দু, কী বললেন মমতা ?


অপরদিকে, সেই সূত্র ধরেই বাংলায় সিএএ চালুর জল্পনা উস্কে দেন শুভেন্দু।  তিনি বলেন,'এক যাত্রায় তো পৃথক ফল হয় না। গুজরাতে যখন কার্যকর হয়েছে, নিশ্চই রুল ফ্রেম করে ফেলেছে ভারত সরকার, আইন তো আগেই হয়ে গেছিল, পশ্চিমবঙ্গেও চালু হয়ে গেল।'তবে বাংলায় সিএএ কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা এ দিন খারিজ করে দেন মমতা। তিনি বলেন, 'আমরা এ‘সবের বিরুদ্ধে, আমরা এর বিরোধিতা করি, গুজরাতে ভোটের জন্য এসব খেলা হচ্ছে, আমি আগেও যা বলেছি, আমি সেখানেই স্থির রয়েছি, ভোট বা রাজনীতি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা মানুষের জীবন বা তাঁদের অধিকার গুরুত্বপূর্ণ।'